লেনদেন শুরুর আগেই দিনের সর্বোচ্চ দামে ক্রয়াদেশ দিয়ে শেয়ারের দাম প্রভাবিত করায় দুটি বিও (বেনিফিশারি ওনার্স) হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি লেনদেন যন্ত্রে এ ক্রয়াদেশ দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন ট্রেডারকে (অনুমোদিত প্রতিনিধি) সাময়িকভাবে লেনদেন কার্যক্রম থেকে বিরত করা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি মীর আখতার হোসেনের শেয়ার নিয়ে। আজ সকালে মূল লেনদেন শুরুর আগের প্রাক–লেনদেন চলাকালে ব্রোকারেজ হাউস আইডিএলসি সিকিউরিটিজ থেকে দিনের সর্বোচ্চ দামে কোম্পানির শেয়ারের ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর দুটি বিও হিসাব থেকে এ ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তা বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স বা তদারকি যন্ত্রে ধরা পড়ে।
সঙ্গে সঙ্গে বিএসইসি থেকে ব্রোকারেজ হাউসটিকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হলে পরে ওই ক্রয়াদেশ তুলে নেওয়া হয়। পরে যে দুটি বিও হিসাব থেকে এ ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই দুটি বিও হিসাব জব্দের আদেশ দেয় বিএসইসি। তা ছাড়া এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
জানতে চাইলে আইডিএলসি সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন বলেন, ‘প্রাক–লেনদেনের সময়ে গ্রাহক এ শেয়ার কেনার আদেশ দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী, আমরা সেই ক্রয়াদেশ লেনদেন যন্ত্রে সাবমিট করেছি শুধু।’
শেয়ারবাজারে মীর আখতারের লেনদেন শুরু হয়েছে গতকাল। প্রথম দিনেই এটির শেয়ারের দাম বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ সীমায় উঠে যায়। এ কারণে লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে মাত্র ৭৩০টি শেয়ারের হাতবদল হয়। দিনের বেশির ভাগ সময়ই এটির শেয়ার বিক্রেতাশূন্য ছিল।
দ্বিতীয় দিনে আজ লেনদেন শুরুর আগে প্রাক–লেনদেন সময়কালে এটির শেয়ারের ক্রয়াদেশ দেওয়া হয় দিনের সর্বোচ্চ দামে ১২১ টাকায়। এদিন এটির শেয়ারের দাম এর বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার আর সুযোগ ছিল না। কিন্তু বিষয়টি লেনদেন শুরুর আগে বিএসইসির নজরে আসে।
তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এ ক্রয়াদেশের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। পরে সেই ক্রয়াদেশটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে আজ সকালে মীর আখতারের শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় ১১৭ টাকা দামে। এরপর সেটি আরও কমে যায়। দিনের বেশির ভাগ সময় এ শেয়ারের দাম ছিল ১০০ টাকার আশপাশে। দিন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হাতবদল হয় প্রায় ৫০ লাখ শেয়ারের।