1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন

পতন ঠেকানোর ফ্লোর প্রাইসে লাভ কার

  • আপডেট সময় : সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
dse-floor-prize

বিএসইসির ফ্লোর প্রাইসের কারণে বহু লোকসানি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য এখনো বেশি। চলতি বছর বেশ কিছু কোম্পানি বিপুল পরিমাণ লোকসান দেওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মে শেয়ারের দাম কমে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। আর এ কারণে কম দামে শেয়ার কিনে সমন্বয়ের সুযোগ হারাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।

চার বছর ধরেই ডুবছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিত খাতের জেমিনি সি ফুড। এর মধ্যে গত দুই বছরে বিপুল পরিমাণ লোকসানে ধুঁকছে কোম্পানিটি।

২০১৯-২০ অর্থবছরে কোম্পানিটি ১০ টাকার শেয়ারে লোকসান দিয়েছে নয় টাকা ৮৩ পয়সা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে যে হিসাব প্রতিষ্ঠানটি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে, তাতে এবার লোকসান আরও বাড়তে পারে। গত ‍জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসেই লোকসান হয়েছে ৭ টাকা ৯২ পয়সা।

বিপুল পরিমাণ লোকসানের কারণে গত বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ২১ পয়সা মাত্র। ৪৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩১২টি শেয়ারে বিভক্ত কোম্পানির রিজার্ভেও কোনো অর্থ নেই, উল্টো দায় বা ঋণ আছে চার কোটি ৬০ লাখ টাকা।

অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সিদ্ধান্তের কারণে এই ডুবন্ত কোম্পানির শেয়ার তার অভিহিত মূল্যের ১৪ গুণেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।

ফ্লোর প্রাইস নামে গত বছরের ২২ মার্চ বিএসইসি যে তালিকা দিয়েছে, সে তালিকা অনুযায়ী জেমিনি সি ফুডের ১০ টাকার শেয়ার ১৪৪ টাকা ৩০ পয়সার নিচে বিক্রি হবে না।

বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শু চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৯০ টাকা লোকসান দিয়েছে। অথচ বিএসইসির নীতির কারণে বিপুল লোকসানি এই কোম্পানির শেয়ারও ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

একইভাবে বছরের ছয় মাসে ৮ টাকা ৭০ পয়সা লোকসান দেওয়া রেনউইক যগেশ্বরের শেয়ারের দাম ৯০০ টাকার নিচে নামতে পারবে না।

মুন্নু অ্যাগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারিজ লিমিডেট লোকসানি কোম্পানি না হলেও মুনাফার পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। মাঝে এক বছর বাদ দিলে লভ্যাংশ ঘোষণার ইতিহাসও ভালো নয়। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য মাত্র ১৪ টাকা ২৮। কিন্তু ১০ টাকার শেয়ার ৭৯৪ টাকার কমে বিক্রি করা যাবে না।

গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে এই ফ্লোর প্রাইস ঘোষণা করা হয়। এতে সাময়িকভাবে পতন থামলেও এখন এই ফ্লোর প্রাইস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো কোম্পানির মৌল ভিত্তি বিবেচনায় না নিয়ে বাজার মূল্যকেই বিবেচনা করা হয়। গত ২২ মার্চের আগের পাঁচ দিনের গড় মূল্য ফ্লোর প্রাইস হিসেবে ধরা হয়।

প্রায়ই পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ ওঠে। কম অভিহিত মূল্যের শেয়ার নিয়েই এই অভিযোগ বেশি এবং মাত্রাতিরিক্ত দাম ওঠার পর এক অর্থে কারসাজিকারকদের সুবিধা হয়েছে যে, দাম একটি পর্যায়ের নিচে আর নামবে না।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি ব্যবসা ভালো করলে যেমন সেই শেয়ারে আগ্রহ বাড়ায় দরও বাড়ে, তেমনি কোনো কোম্পানি খারাপ করলে সেগুলোর দর কমে। কিন্তু বিএসইসির এই সিদ্ধান্তে সেটা হচ্ছে না।

আবার কোনো কোম্পানির দাম বেশি কমে গেলে বিনিয়োগকারীরা একই শেয়ার আরও বেশি কিনে দাম সমন্বয় করেন। পরে কোম্পানি আবার মুনাফায় ফিরলে দাম কিছুটা বাড়লে সমন্বয়করা শেয়ার বিক্রি করে লোকসান থেকে বের হওয়ার সুযোগ পায়।

কিন্তু ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারমূল্য কমতে না পারায় উচ্চমূল্যে কেনা শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করা যাচ্ছে না।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এক হাজার ৩০০ টাকায় যারা বাটার একটি শেয়ার কিনেছেন, সেই কোম্পানির শেয়ার দর ৪০০ টাকায় নামলে এই দরে কেউ যদি আরও দুটি শেয়ার কিনেন, তাহলে গড় দাম দাঁড়ায় ৭০০ টাকা।

কিন্তু এখন ৭০৯ টাকায় কিনতে বাধ্য করায় এই দামে কখনো সমন্বয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি উচ্চমূল্যে শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে।

ফ্লোর প্রাইসে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৪টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে বেশির ভাগই লোকসানি, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই। ফলে লেনদেন খুবই কম।

বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, হয় ফ্লোর প্রােইসের বিষয়টি আবার পুনর্বিবেচনা করা দরকার। নয়তো কোনো কোম্পানির বাজারদর ছাড়াও মৌলভিত্তি বিবেচনায় আনা দরকার। বা কোনো কোম্পানি খারাপ করতে থাকলে ফ্লোর প্রাইসও কমিয়ে দেওয়া উচিত।

এসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস যে বিনিয়োগকারীরা যৌক্তিক মনে করছেন না, তার প্রমাণ লেনদেনেই। সর্বনিম্ন দামেও শেয়ার কেনার অর্ডার আসে না বললেই চলে।

রোববার জিমিনি সিফুডের শেয়ারের মাত্র পাঁচটি লেনদেন হয়েছে। শেয়ারের সংখ্যা ৮৩৫টি। এদিন মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ২২টি। বহুজাতিক কোম্পানি বাটার শেয়ারের লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৭৯৮টি।

গত কয়েক কার্যদিবসে রেনউইক যগেশ্বরের কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমানও মনে করেন ফ্লোর প্রাইসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। যেসব কোম্পানি দীর্ঘ সময় ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে, সেগুলোকে কয়েক দিনের জন্য ফ্রি করে দেওয়া উচিত। পরে না হয় নতুন ফ্লোর প্রাইস ঘোষণা করা যাবে।’

রকিবুর রহমান বলেন, তাহলে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা কোম্পানিগুলো আবার লেনদেন হবে। যারা কিনতে চায় তারা কিনবে, যারা বিক্রি করতে চাচ্ছে, তারাও বিক্রি করতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা যখন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য হয়। আর ফ্লোর প্রাইস যেহেতু পুঁজিবাজারের সব কোম্পানির জন্য, সেহেতু এখানে ভালো কোম্পানি, খারাপ কোম্পানি বিবেচনা করার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটা বিষয় নজরে রেখেছি যেকোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর যখন মূল্য সমন্বয় হয়, তখন ফ্লোর প্রাইস বাধা হচ্ছে কি না। এখনো তা হয়নি। ফ্লোর প্রাইসের সংশোধনের বিষয়ে কমিশনে কোনো আলোচনা হয়নি, সেজন্য এখন যে অবস্থায় আছে এটি সেভাবেই থাকছে।’

ফ্লোর প্রাইসের কারণে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণার পরেও মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ারদরে সমন্বয় হয়নি। স্বাভাবিক নিয়মে রেকর্ড ডেটের পর সেই কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে ঘোষিত লভ্যাংশের সঙ্গে সমন্বয় হয়।

কিন্তু গত ২২ মার্চ মুন্নুর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা নির্ধারণের পর পর কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করে। স্বাভাবিক নিয়মে কোম্পানিটির সমন্বয় করা দাম হওয়ার কথা ছিল ৭২০ টাকা। কিন্তু ফ্লোর প্রাইস এখনো আগের দরেই আছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সূচকের পতনে কমেছে লেনদেন

  • ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪