দেশের নিজস্ব সম্পদের তহবিল জোরদার করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সৌদি আরামকোর শেয়ার বিক্রি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। কয়েক বছরের মধ্যে এই তহবিলের সম্পদ এক লাখ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চান তিনি।
সৌদি আরবের ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি সৌদি অর্থনীতির রূপান্তর ও তেলভিত্তিক রাজস্ব থেকে দেশকে বহুমুখী রাজস্বের পথে নিতে তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়।
বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরামকো। ২০১৯ সালের শেষ দিকে বিশ্বের বৃহত্তম আইপিও ছেড়ে শেয়ারবাজারে আসে প্রতিষ্ঠানটি। ওই সময় ২ হাজার ৫৬০ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরও শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৯৪০ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল উত্তোলন করে।
যুবরাজ সালমান বলেন, ‘সামনের বছরগুলোতে আরামকোর আরও শেয়ার আসছে। এখান থেকে পাওয়া নগদ অর্থ পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে (পিআইএফ) স্থানান্তর করা হবে। পিআইএফ ওই অর্থ দেশে ও বিদেশে বিনিয়োগ করবে।’আরামকোর আরও শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু ছাড়াও পিআইএফের বিনিয়োগে সৌদি আরবে বড় প্রকল্প হিসেবে রেড সি ট্যুরিজম, এনইওম নামের ব্যবসায়িক জোন তৈরি করা হবে।
গত মঙ্গলবার সৌদির পিআইএফের প্রধান বলেন, ‘বাজার পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আরামকো আরও বেশি শেয়ার বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। বৃহস্পতিবার আরামকোর শেয়ারের দাম দশমিক ১৪ শতাংশ কমে যায়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মূল্যমান দাঁড়ায় ১ দশমিক ৮৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বর্তমানে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পিআইএফকে ২০২৫ সাল নাগাদ এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের রূপান্তর করার কথা ভাবছেন যুবরাজ সালমান। এতে এ তহবিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল হয়ে দাঁড়াবে। আগামী ১০ বছরে এ তহবিল থেকে ৩ ট্রিলিয়ন রিয়াল বা প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার নতুন খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে ২০২৫ সাল নাগাদ নতুন ১৮ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, পিআইএফের বিনিয়োগ ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় ব্যাপক বাইরের তহবিলও প্রয়োজন পড়বে।
গত কয়েক বছরে সৌদি আরব অবশ্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। তবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে এখনো ঘাটতি রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারি সংকট ও তেলের দাম কমে যাওয়ায় সৌদি আরবের অর্থনীতি তীব্র চাপের মুখে পড়ে। দেশটির মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি আসে তেল বিক্রি থেকে। তাই তেলের দাম কমে গেলে বিপদে পড়ে দেশটির অর্থনীতি। যুবরাজ সালমান এখন তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য খাতকেও বিকশিত করার চেষ্টা করছেন।