পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিন গ্রাহকের ঋণের বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়ায় এ জরিমানা করা হয়। তবে জরিমানা মওকুফ চেয়ে আবেদন করলেও তা গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা যায়, উত্তরা ফাইন্যান্স তিন গ্রাহকের ঋণের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) সঠিক তথ্য জমা দেয়নি। এর ফলে ওই তিন গ্রাহককে ঋণ দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়ে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের মুখে জরিমানার মুখে পড়ে উত্তরা ফাইন্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, উত্তরা ফাইন্যান্স গ্রাহকের ঋণের বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়েছে। এ জন্য শাস্তির মুখে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জরিমানা মওকুফের আবেদন করলে তা নাকচ হয়েছে।
সূত্র জানায়, যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণের বিষয়ে সঠিক তথ্য দেয়নি, সেই তিন প্রতিষ্ঠান হলো এমআরআই ট্রেডার্স, সাদ মুসা ফেব্রিকস ও প্রীতি সোয়েটার্স।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তরা ফাইন্যান্সের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা গরমিলের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ পরিদর্শনে এ তথ্য পাওয়া গেলেও উত্তরা ফাইন্যান্সের দাবি অসংগতি কয়েক হাজার কোটি নয়, কয়েকশ’ কোটি টাকার। আর্থিক প্রতিবেদনে এমন অনিয়মের বিষয়ে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, তথ্য গোপনের অপকৌশল ছিল অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের। এ ঘটনাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি গ্রাহকদের বিশ্বাসে আরেকটি আঘাত বলে মনে করেন তারা।
পিকে হালদারের পিপলস লিজিং কাণ্ডের পর আরেকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ভয়াবহ আর্থিক অনিয়মের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে এটি উঠে এসেছে।
২৪৯ কোটি টাকা মার্জিন ঋণ ছাড় করলেও শেয়ার কেনার কোনো প্রমাণ নেই। এ ছাড়া প্রায় ৫২২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে উত্তরা ফাইনান্সের পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। ব্যালেন্স সিটে অগ্রিম ও পূর্বে পরিশোধ এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের নামে যথাক্রমে ৯০ কোটি ও ২২১ কোটি টাকা দেখানো হলেও পর্যালোচনায় দেখা যায়, অনুমোদন ছাড়াই পরিচালকদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে মোট ১ হাজার ২০১ কোটি টাকা ছাড় করেছে উত্তরা ফাইনান্স। এ ছাড়া ১১৮টি অনুমোদনহীন ঋণ হিসেবে উত্তরা মটরস ও গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৩৩৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।