সানোফি বাংলাদেশের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে ‘শঙ্কা’ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, ক্ষতিপূরণ এবং অর্জিত বেনিফিট দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা এখন পর্যন্ত তারা পাননি।
সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ারকার্স-এমপ্লোয়িজ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে শনিবার সকালে পল্টন টাওয়ারে ইকোনোমিক রিপোর্টার ফোরামের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলন এ শঙ্কার কথা জানান তারা।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর কোম্পানির কান্ট্রি চেয়ার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাদের এমপ্লয়ীদেরকে ঘোষণা দেন যে ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে তৃতীয় কোনো একটি কোম্পানির কাছে তাদের ৫৫ পার্সেন্ট শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।
প্যারিসভিত্তিক বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সানোফি তাদের মালিকানা ছেড়ে দিলেও তাদের ওষুধ বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর তাদের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোম্পানির এই ধরনের ঘোষণার পর থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন এবং তারা তাদের আর্ন বেনিফিট ও কম্পেনসেশন দাবি করেন।
সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ারকার্স-এমপ্লোয়িজ এসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুজ্জামান রাজু বলেন, সানোফির লোকাল এবং গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টকে আহ্বান জানাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিগুলো তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পূরণ করুন। অন্যথায় আমরা তাদের দাবিগুলো আদায় করার জন্য কার্যক্রম শুরু করতে বাধ্য হবে। আমরা একাধিকবার তাদের যৌক্তিক দাবির কথা সানোফি বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্টকে জানালেও তারা শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন। তারা এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষতিপূরণ বা অর্জিত বেনিফিট যেটা কোম্পানির কাছে গচ্ছিত আছে, সেগুলো নিয়ে কিছুই বলেনি।
তিনি বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে আমরা কখনো পিছুপা হবো না।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার চক্রবর্তী বলেন, সানোফি বাংলাদেশ এমপ্লয়ীজদের কাছে একটি ভালোবাসার নাম। ৬২ বছর ধরে এই ভালোবাসার বন্ধন। শুধু উন্নত প্রযুক্তির ঔষুধ উৎপাদনই নয়, সানোফি সব সময়ই তার এমপ্লয়ীজদের স্বার্থ-সংরক্ষণের ব্যাপারে অগ্রগামী একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের অনেক দেশেই সানোফি সেটা করে দেখিয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশেও সানোফি তার ব্যতিক্রম করবে না।
সানোফি ছয় দশকের বেশি সময় ধরে ওষুধ প্রস্তুত ও বাজারজাত করছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল কোম্পানিটি।
ফরাসি এ কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা করছে ১৯৫৮ সাল থেকে। সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের ৪৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে। বাকিটা সানোফির হাতে।
গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের পর সানোফি হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় কোম্পানি, যারা বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।