1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন

শেয়ারবাজারের নেগেটিভ ইকুইটি: স্থায়ী সমাধান ও কঠোর তদারকির দাবি

  • আপডেট সময় : রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

শেয়ারবাজারে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের সমস্যা এক দীর্ঘমেয়াদী জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি বিশেষত ২০১০ সালের শেয়ারবাজারের ধসের পর থেকেই প্রধান সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে। ঋণাত্মক ঋণ বা নেগেটিভ ইকুইটি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে বিনিয়োগকারীর ঋণ পরিশোধের জন্য শেয়ারের মূল্য কমে গিয়ে ঋণের পরিমাণের তুলনায় খুবই নিচে চলে যায় এবং প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ঋণ আদায় করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

১. সমস্যা ও এর সৃষ্টি

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে হঠাৎ করে যে বড় ধস নামে তা থেকে শেয়ারবাজারের ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের সমস্যার উৎপত্তি হয়। ধসের আগে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের যেভাবে মার্জিন লোন বা প্রান্তিক ঋণসুবিধা প্রদান করেছিল তা অতিরিক্ত ছিল। এই ঋণদানের ফলে শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীরা ঋণের পরিমাণও পরিশোধ করতে পারেনি। এর ফলে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ঋণাত্মক ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং এটি ধীরে ধীরে তাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ করে দেয়।

২. বর্তমান পরিস্থিতি

বর্তমানে শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ঋণাত্মক ঋণের পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এই ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং সংরক্ষণ করতে হবে যা প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা থেকে রাখা হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে বাজারে স্থিতিশীলতা না থাকার কারণে এই নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর যথেষ্ট আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। তাই বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) বারবার সময়সীমা বাড়িয়েছে তবে সঠিক সমাধান আসেনি।

৩. ঋণাত্মক ঋণের অনিয়ম ও দুর্নীতি

একটি বড় সমস্যা হল যে অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণাত্মক ঋণ হিসাবকে অনিয়মের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শেয়ারের দাম বেশি দেখিয়ে কিনে নিয়ে এবং পরে তা ঋণাত্মক ঋণ হিসাব হিসেবে স্থানান্তর করে তাদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ করেছে। কিছু ক্ষেত্রে দুষ্কৃতিকারী কর্মকর্তা শেয়ার কিনে নিয়েছেন এবং বিনিময়ে শেয়ারপ্রতি কিছু অর্থ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করেছেন।

৪. স্থায়ী সমাধান কি হতে পারে?

বর্তমানে শেয়ারবাজারে ঋণাত্মক ঋণের সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাওয়ার কথা উঠছে। বিএসইসি সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের প্রভিশনিংয়ের সময়সীমা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে এর জন্য একটি বড় প্রশ্ন উঠছে: “এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান কখন আসবে?” বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন যে শুধু সময়সীমা বাড়িয়ে আর এই সমস্যা সমাধান হবে না। এর জন্য কিছু কার্যকর এবং বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:

ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের তথ্য সংগ্রহ করা: সমস্ত ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

শেয়ারবাজারের নিয়মিত তদারকি: তদারকি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা এবং ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের অনিয়ম রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

অনাদায়ি ঋণের অবলোপন: কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংক যেমন খেলাপি ঋণ অবলোপন করে তেমনি শেয়ারবাজারে অনাদায়ি ঋণ অবলোপন বা রাইট অফ করা যেতে পারে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি: বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা এবং ঋণ নেওয়ার পূর্বে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া।

৫. বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের ভূমিকা

বিএসইসি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেহেতু শেয়ারবাজারে অনাদায়ি ঋণ দীর্ঘদিন ধরে চলমান তাই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ এখনই গ্রহণ করতে হবে। বিএসইসি ইতিমধ্যে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে যেমন – অতিরিক্ত সময় বর্ধিত করা এবং শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছু শর্ত আরোপ করা।

এই সমস্যা শেয়ারবাজারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ঋণাত্মক ঋণের সঠিক প্রভিশনিং এবং ঋণ অবলোপনের মাধ্যমে বাজারকে সুস্থ ও শক্তিশালী করা সম্ভব। তবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে হলে কঠোর পদক্ষেপ এবং প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা গ্রহণ করতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

লোকসান কমেছে ডেসকোর

  • ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • প্রাণের ইপিএস কমেছে

  • ২৭ এপ্রিল ২০২৫