বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পিএলসি পরিচালিত ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। একইসঙ্গে, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চলমান তদন্তও হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছে কমিশন। ফলে, এখন থেকে এই ফান্ডগুলোর ব্লক মার্কেট ট্রানজাকশনে আর কোনো বাধা থাকছে না।
বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “আইনি বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার পর এবং বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় আমরা তদন্ত চালিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য ফান্ডগুলোর নিয়ন্ত্রণ রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
২০২৩ সালের জুনে, বিএসইসি অভিযোগ তুলেছিল যে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বিনিয়োগকারীদের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং ফান্ডগুলোর অপব্যবহার করেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ব্লক মার্কেট লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
যে ১০টি মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল:
ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফার্স্ট জানাতা ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, পিএইচপি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড।
তবে বিনিয়োগকারীদের একাংশ মনে করছেন, এতদিন ধরে চলা তদন্ত হঠাৎ বন্ধ হওয়া এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বাজারে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বিএসইসির এই সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন ছিল, যা এখন প্রমাণিত হয়েছে।”
তবে, বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন ধরে যে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চলছিল, তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পেছনে অন্য কোনো অদৃশ্য চাপ বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি।
তারা মনে করছেন, এত বড় সিদ্ধান্তের পেছনে শুধুমাত্র “আইনি পর্যালোচনা” যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা হতে পারে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার পরিবর্তে বড় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় চলে যাচ্ছে কিনা, সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।