দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে রিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হলে এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রিমান্ড শুনানির জন্য দুপুর ১২টায় এজলাসে তোলা হয়। দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করার স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, মামলার এজাহারে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। যে টাকা নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সেটা কোনো অবৈধ টাকা না। এখানে কোনো মানি লন্ডারিংয় হয়নি। এরপর আদালত শিবলী রুবাইয়াতের বক্তব্য আছে কি না জানতে চান।
এসময় শিবলী রুবাইয়াত আদালতকে বলেন, আমার যা সম্পত্তি সেগুলো পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। শেয়ার মার্কেটে আমার কোনো বিনিয়োগ নেই। আমি নিজে কোনো ফ্ল্যাটও কিনিনি। এমনকি রাজউকের কোনো প্লট চাইনি। অথচ আমাকে বলা হচ্ছে মানি লন্ডারার বা অর্থ পাচারকারী। মানি লন্ডারিং করলে তো হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করতাম। আমার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব পাঁচ মাস আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি প্রতিনিয়ত দুদককে সহযোগিতা করেছি। যখন যা চেয়েছে তাই দিয়েছি। গতকালও আমি দুদকে গিয়েছি। অথচ তারা কেন আমাকে রিমান্ডে চাচ্ছে সেটা বোধগম্য নয়। এসব কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন।
এর আগে, বুধবার দুদকের উপপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে শিবলী রুবাইয়াতসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— মোনার্ক হোল্ডিং ইনকর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ. মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের প্রোপাইটর আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির দিলকুশা শাখার ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের সাবেক ইনচার্জ ইসরাত জাহান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল হোসেন, এসইভিপি সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুয়া বাড়িভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এক কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুষ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া ভুয়া বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানি না করে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করেন।