বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা পুুঁজিবাজার করোনার মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে পুুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একদিকে যেমন লেনদেনে রেকর্ড, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট দূর হয়েছে।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। একের পর এক পদক্ষেপে বাজারবিমুখ বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেনও আবার গতি ফিরে পেয়েছে। ফলে নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বাজার সংশ্লিষ্ঠরা।বিনিয়োগকারীরা আবার পুুঁজিবাজারমুখী হচ্ছেন।
এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের বিপরীতে সুদ নির্ধারণ করে দিচ্ছে। ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মার্জিন ঋণের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ সুদ নিতে পারবে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলা বিনিয়োগকারীদের থেকে কস্ট অফ ফান্ডের থেকে ৩ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না। এরফলে মার্জিন ঋণের সুদ কমানোর বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে যাচ্ছে বিএসইসি। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছে। মার্জিন ঋণের সুদ কমানোর জন্য দীর্ঘদিন যাবত দাবি করে আসছিল বিনিয়োগকারীরা। তার পরিপেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে বিএসইসির সূত্র জানায়।
এদিকে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বেশি সুদ নেয়ার। কোন কোন ব্রোকারেজ হাউজ ১৮ থেকে ২০ শতাংশ সুদ নিচ্ছে বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া পুঁজিবাজারে সদ্য তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেডের টানা দরপতণের কারণ অনুসন্ধান করতে দুই সদস্যের কমিটি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে পুঁজিবাজাওে চলমান ইতিবাচক ধারায় ডমিনেজ স্টিলের এই নেতিবাচক প্রবণতা সন্দেহ তৈরী করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে। তাই লেনদেন শুরুর পরবর্তীতে কেনো টানা উত্থান এবং এরপরে কেনো ধারাবাহিক পতন, তা খতিয়ে দেখতে ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।
সূত্র মতে, দ্ইু সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রধান করা হয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উপ পরিচালক সাইফুল ইসলামকে। অন্য সদস্য হলেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক বনি ইয়ামিন। কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেয়া সাহসী পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম ছিল ফ্লোর প্রাইস তুলে না নেয়া। শেয়ারের দরপতন ঠেকাতে গত ১৮ মার্চ আরোপ করা ফ্লোর প্রাইস (প্রতিটি শেয়ারের বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন দর) তুলে নেয়ার জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বহুমূখী চাপ থাকা সত্তেও সাধারন বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় তাতে কোন কর্ণপাত করেননি বিএসইসির চেয়ারম্যান।
এ বিষয় জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন নেতৃত্বই এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে, যেখানে মূখ্য ভুমিকায় রয়েছেন সংস্থাটির নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।বাজার আরও ভালো হবে। পুঁজিবাজারের মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। আস্থার সংকটের কারণেই পুঁজিবাজার এতো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।সুশাসন নিশ্চিতে বর্তমান কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরী হয়েছে। এছাড়া বাজারবান্ধব একেরপর এক সিদ্ধান্তে আস্থা বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের।