1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন

যেভাবে গতিশীল করা যেতে পারে শেয়ারবাজার

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

গত ১৫ বছরে দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। একের পর এক দুর্বল কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা তোলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার একের পর এক অযাচিত হস্তক্ষেপে শেয়ারবাজারের প্রাণপ্রদীপ নিভু নিভু অবস্থা। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে গতিশীলতা আনতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজারে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। প্রথমেই গত ১৫ বছরে যেসব অনিয়ম হয়েছে, তা বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে করতে হবে বিভিন্ন সংস্কার। পাশাপাশি বাজারে ভালো ভালো কোম্পানির আইপিও আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরবে এবং নতুন ভালো ভালো বিনিয়োগকারী আসবেন।

শেয়ারবাজার গতিশীল করতে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত- এমন প্রশ্ন করলে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বাজারে হস্তক্ষেপ না করা, নিরপেক্ষভাবে কাজ করা এবং কারসাজি বন্ধ করা- এটুকু করলেই শেয়ারবাজার গতিশীল হবে। আর কিছু করা লাগবে না।’

বাজার স্বাভাবিক করে দিতে হবে। বাজার স্বাভাবিক করলে পড়বে, আবার নিজে নিজেই উঠে যাবে। এই মুহূর্তে যদি বাজার একটু বেটার অবস্থায় থাকে, তাহলে ৩ শতাংশের যে বাধা (একদিনে দাম কমার সীমা) সেটা তুলে দিতে হবে।- ডিএসই পরিচালক রিচার্ড ডি’ রোজারিও

একই প্রশ্ন রাখা হয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রিচার্ড ডি’ রোজারিওর কাছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাজারে কিছু পার্মানেন্ট ড্যামেজ হয়েছে। এই ড্যামেজগুলো রিপেয়ার করতে গেলে সময় লাগবে। এগুলোর সমাধান রাতারাতি সম্ভব না। বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভিতরের জায়গাগুলো ঠিক করতে হবে। বিএসইসিতে অনেক ভালো লোকও আছে। তাদের দিয়ে কাজ করাতে হবে মূল জায়গাগুলোতে। যে আইন-কানুনগুলো খুব সাংঘর্ষিক, সেগুলো ঠিক করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাজে যে আইপিওগুলো চলে আসছে, সেগুলো তো মার্কেট থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। এখন এগুলো বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। বিশেষ করে শেষ কয়েক বছরে স্টক এক্সচেঞ্জের টাকা ড্রেনেজ হয়ে গেছে বাজে আইপিওর কারণে। সেগুলো তো ফিরিয়ে আনা যাবে না। এখন মূল কাজ হবে আস্থা ফিরিয়ে আনা। যাতে মানুষ আবার শেয়ারবাজারে ফেরত আসে।’

ফ্লোর প্রাইসের কারণে মানুষ বিশেষ করে বড় বড় বিনিয়োগকারীরা স্টক মার্কেট থেকে বের হয়ে গেছেন- এমন মন্তব্য করে ডিএসইর এই পরিচালক বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের কোটা এখনো কিন্তু আছে। মার্কেটের যাতে প্রতিক্রিয়া না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে খুব সতর্কতার সঙ্গে এটা ওঠাতে হবে।’

আস্থা ফেরার জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বাজার স্বাভাবিক করে দিতে হবে। বাজার স্বাভাবিক করলে পড়বে, আবার নিজে নিজেই উঠে যাবে। এই মুহূর্তে যদি বাজার একটু বেটার অবস্থায় থাকে, তাহলে ৩ শতাংশের যে বাধা (একদিনে দাম কমার সীমা) সেটা তুলে দিতে হবে। স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার কার্যকর করতে হবে। জেড গ্রুপের ক্ষেত্রে আগের যে আইন-কানুন ছিল সেটা থাকবে (লভ্যাংশ না দিলে জেড গ্রুপে যাবে)। নতুন করে আইন-কানুন করার আর কোনো মানে হয় না। দুদিন পরপর নিয়ম পরিবর্তন করা যাবে না।’

‘মাঝখানে সমন্বয়হীনতার অভাব ছিল, সেটা দূর করতে হবে। আর আস্থা ফেরানোটা কাল সকালের মধ্যেই হবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় ভালো কোম্পানির আইপিও আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য বিএসইসি, ডিএসই এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর উদ্যোগ নিতে হবে। ভালো কিছু আইপিও আসলে মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং ভালো কিছু বিনিয়োগকারীও আসবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শেয়ারবাজার পুরোপুরিভাবে অর্থনীতির প্রতিটি চালিকাশক্তির ওপর নির্ভরশীল। সেখানে অর্থনীতির অন্য জায়গাগুলো যদি অস্থিতিশীল থাকে, তাহলে তা শেয়ারবাজারের ওপর প্রভাব ফেলে। যেমন সুদের হার যদি বাড়তে থাকে, তাহলে প্রভাব ফেলে। রিজার্ভের (বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ) অবস্থান কম থাকলে তার চাপ শেয়ারবাজারে পড়ে। ব্যাংকে টাকা কম থাকলে তার চাপও পড়ে। বাহ্যিক কিছু বিষয় শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলে। সুতরাং, সেই জায়গাগুলোও ঠিক হওয়া জরুরি।’

শেয়ারবাজার গতিশীল করার জন্য ভালো কোম্পানি ছাড়া উপায় নেই। প্রচুর পরিমাণে ভালো কোম্পানির শেয়ারবাজারে আনতে হবে। এটাতো রাতারাতি আনা যাবে না। এর জন্য সরকারি কোম্পানির শেয়ারগুলো এই মুহূর্তে বাজারে আনা দরকার।- ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম

রিচার্ড ডি’ রোজারিও বলেন, ‘আমাদের মার্কেটটা সম্প্রসারণ করতে হবে। এখন যে বন্ড মার্কেট তা নামকাওয়াস্তে বন্ড মার্কেট। এটা দিয়ে হবে না। প্রকৃত বন্ড মার্কেট চালু করতে হবে। বন্ড একই সঙ্গে শেয়ারবাজার ও বাংলাদেশ ব্যাংকে লেনদেন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে লেনদেনের ক্ষেত্রে সুবিধা এত বেশি কেউ এখানে (শেয়ারবাজার) বন্ড ক্রয়-বিক্রয় করতে যায় না। পৃথিবীর অন্য দেশে শেয়ারবাজারে বন্ড যেভাবে লেনদেন হয়, আমাদের এখানে সেই নিয়ম করে বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মার্কেট উঠবে এবং নামবে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মার্কেট খারাপ হলে সবাই হতাশ হয়ে যায়, এটা বাজারের জন্য সব থেকে ক্ষতিকারক। মার্কেট খারাপ না হলে ক্রেতা আসবে না। কোনো শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হলে, সেটা নামতে বাধ্য। আটকে রাখার কোনো পথ নেই। চাহিদা ও সরবরাহ ওটাকে জায়গা মতো নিয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিউচুয়াল ফান্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে পুরোপুরি সংস্কার করতে হবে। প্রত্যেকটা মিউচুয়াল ফান্ডকে ধরে নিয়ে এসে, এদের আসল বিনিয়োগ কী, আসল ব্যালেন্স শিট কী এবং এক্সপার্ট লোক আছে কি না তা দেখতে হবে। সেকেন্ডারি মার্কেটে মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা নীতিমালা করে দিতে হবে। একটা শেয়ারে কত শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে, সেকেন্ডারি মার্কেটে তাদের কত শতাংশ বিনিয়োগ থাকতেই হবে- এ ধরনের কিছু নিয়ম করে দিতে হবে। মিউচুয়াল ফান্ড যদি ভালো হয়, তাহলে শেয়ারবাজারও ভালো হবে।’

শেয়ারবাজার গতিশীল করতে কোন ধরনের সংস্কার বা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন- এমন প্রশ্ন রাখা হয় ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলামের কাছে। তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার গতিশীল করার জন্য ভালো কোম্পানি ছাড়া উপায় নেই। প্রচুর পরিমাণে ভালো কোম্পানির শেয়ারবাজারে আনতে হবে। এটাতো রাতারাতি আনা যাবে না। এর জন্য সরকারি কোম্পানির শেয়ারগুলো এই মুহূর্তে বাজারে আনা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘বাজার যদি ঠিক করতে হয়, তাহলে বাজারে এ পর্যন্ত কী কী অনিয়ম হলো আগে এটার একটা খতিয়ান বের করতে হবে। ক্ষতিয়ান বের করে যেটা করণীয়, সেটা যথাযথ করতে হবে। তাছাড়া মানুষ আস্থা ফিরে পাবে না। মানুষ দেখতে চায় যে চেঞ্জ আমরা বলছি, আসলে চেঞ্জটা কোথায় এবং হয়েছে কি না। এটার জন্য আপনাকে তো কিছু করে দেখাতে হবে।’

‘বাজারের ওপর বিএসইসির অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। এর জন্য স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে। বিএসইসির কাজ হবে পলিসি মেকিং করা। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে বিএসইসি যে সূচক দেখে, এটা ভুল। বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।

ডিবিএ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের এখানে গত ১৫ বছরে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তত্ত্বাবধানেই সব অনিয়ম হয়েছে। আগে বের করতে হবে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কে কোথায় গাফিলতি ছিল। অনিয়ম হয়েছে মার্কেটের লোক হিসেবে সেটা আমরা দেখি। কিন্তু কী পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে, সেটার তথ্য আমাদের কাছে নেই। এটার জন্য তদন্ত করতে হবে। বাজারে কী কী অনিয়ম হয়েছে তা বের করার জন্য একটা তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটি করে বের করতে হবে কোথায় কোথায় অনিয়ম হয়েছে। সেখানেই সংস্কারের প্রস্তাব আসবে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

শেয়ারবাজার বন্ধ আজ

  • ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • Dividends

    ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা

  • ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪