দেশের শেয়ারবাজারে সম্প্রতি ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যার জের ধরে প্রতিদিনই সূচকের পাশাপাশি বাড়ছে বেশিরভাগ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ও শেয়ারদর। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ডিএসই একসঙ্গে দুটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে। কাল লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করেছে।
দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়তে দেখা গেছে ৪৯ পয়েন্ট। লেনদেন শেষে সূচকের অবস্থান হয়েছে পাঁচ হাজার ২৪ পয়েন্টে। এর মধ্য দিয়ে দুই মাসেরও বেশি সময় পর সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে। এর আগে চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সূচকটি পাঁচ হাজার তিন পয়েন্টে অবস্থান করছিল। পরের দিন অর্থাৎ ২৯ সেপ্টেম্বর সূচকটি কমে পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। এরপর দীর্ঘ দুই মাস ছয় দিন সূচক আবার পাঁচ হাজার পয়েন্টে ফিরে যায়।
এদিকে সূচকের পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের বাজার মূলধন চার লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় চার লাখ তিন হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে দিয়ে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর বাজার মূলধন চার লাখ কোটি টাকা ছাড়াল। এর আগে চলতি বছরের ১৯ জুলাই বাজার মূলধন ছিল চার লাখ দুই হাজার কোটি টাকা।
বাজারের এ পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই। তারা চান পুঁজিবাজারে এই পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি হোক। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজার এখন ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছে। বাজারে স্থিতিশীল পরিবেশ থেকে যদি সূচক বা বাজার মূলধন বাড়ে, তা খারাপ নয়। এটা বাজারের ভালো লক্ষণ।
এদিকে সন্তোষজনকহারে সূচক এবং বাজার মূলধন বৃদ্ধির দিন খাতভিত্তিক লেনদেনে তেমন নজর ছিল না বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানির বিবেচনা নিয়েই তাদের লেনদেন করতে দেখা যায়। তবে খাতভিত্তিক লেনদেনে কিছুটা এগিয়ে ছিল বিবিধ খাত। এই খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। দিন শেষে মোট লেনদেনে খাতটির একক অবদান দেখতে পাওয়া যায় ১০ শতাংশের কিছু বেশি। তবে পতন দেখা গেছে বিমা ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটে। কমেছে এ দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। দুই খাতেই বিক্রির চাপ লক্ষ করা যায়। দিন শেষে মোট লেনদেনে বিমা খাতের একক অবদান দেখা যায় ২৫ শতাংশ। পক্ষন্তারে মিউচুয়াল ফান্ডের একক অবদান ছিল পাঁচ শতাংশের কিছু বেশি।
অন্যদিকে বড় উত্থানের দিন লেনদেনও ছিল সন্তোষজনক। দিন শেষে ডিএসইতে মোট ৮৪৩ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ৩১ কোটি টাকা ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন।