শেয়ারধারীদের জন্য ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ। গত মার্চে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য কোম্পানিটি এই লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ২০১৭ সালের পর এটিই কোম্পানিটির পক্ষ থেকে ঘোষিত সর্বোচ্চ লভ্যাংশ। ২০১৭ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল বার্জার পেইন্টস। তবে ওই সময় কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ছিল কম। তাই লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করা অর্থের পরিমাণও ছিল কম।
কোম্পানি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের পরিশোধিত মূলধন ছিল প্রায় ২৩ কোটি টাকা। তাতে ওই বছরের জন্য ঘোষিত ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বিতরণে কোম্পানিটির খরচ হয়েছিল ১৯০ কোটি টাকা। এরপর ২০১৮ সালে কোম্পানিটি ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। তাতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪৬ কোটি টাকায়। পরিশোধিত মূলধন তথা শেয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের জন্য ঘোষিত ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বিতরণে কোম্পানিটির খরচ হবে প্রায় ২৩১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে টাকার অঙ্কে এ বছরই সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ বিতরণ করবে বার্জার পেইন্টস।
জানতে চাইলে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব খোন্দকার আবু জাফর সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, টাকার অঙ্কে এবারই সর্বোচ্চ পরিমাণ লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের পর এ লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আজ রোববার আর্থিক বছর শেষে ঘোষিত লভ্যাংশের তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে। তার আগে গত শনিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় বছর শেষের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত মার্চে সমাপ্ত আর্থিক বছরে বার্জারের মুনাফা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২৪ কোটি টাকা। আগের বছর এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩০১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা ২৩ কোটি টাকা বা ৮ শতাংশের মতো বেড়েছে। তাতে বেড়েছে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএসও। ২০২৪ সালের মার্চে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা ৯২ পয়সা। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ৬৪ টাকা ৯১ পয়সা।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগের বছরের চেয়ে কোম্পানির আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে। তবে আয় যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে মুনাফা। এর কারণ সম্পর্কে কোম্পানি সচিব খোন্দকার আবু জাফর সাদিক বলেন, পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে এ বছর বিভিন্ন খাতে খরচও কমানো হয়েছে। যার সুফল মিলেছে বছর শেষে মুনাফায়।