প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলমের নামে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিতে শেয়ার রয়েছে ৫৮ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৫ লাখ টাকার।
এছাড়া, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা রয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এফডিআর রয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার। স্ত্রীর ব্যাংক স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ও ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসা তথ্যে জাহাঙ্গীর আলম, তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জাহাঙ্গীর আলমের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে রয়েছে দুটি দোকান, মিরপুরে সাততলা ভবন ও গ্রামের বাড়িতে একতলা দালান। স্ত্রীর নামে রয়েছে আটতলা ভবন, যার দাম দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
মিরপুরে দুটি ফ্ল্যাটের দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ৪৪ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ২ হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার োম উল্লেখ করা হয়েছে ৭৬ লাখ টাকা।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ সাড়ে ৪ একর। মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। স্ত্রীর অকৃষিজমি আছে ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার। আছে আরও বহু সম্পদ।
জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর একটি গাড়ি আছে, যার দাম হলফনামায় দেখানো হয়েছে ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৭৫ তোলা স্বর্ণের দর দেখানো হয় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর স্ত্রীর স্বর্ণ আছে ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকার। আসবাব ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ১০ লাখ ২৮ হাজার টাকার, স্ত্রীর নামে আছে ৯ লাখ টাকার।
জাহাঙ্গীর একটি পিস্তল ব্যবহার করেন, যার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। অংশীদারি ফার্মে তার মূলধন আছে ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। স্ত্রীর ব্যবসায় মূলধন আছে ৭৩ লাখ টাকার।
কৃষি খাতে তার বছরে আয় ৪ লাখ টাকা, বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ১১ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং সঞ্চয়পত্রের আয় ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। চাকরি থেকে ভাতা দেখানো হয় বছরে ৬ লাখ টাকা এবং অন্য উৎস থেকে বছরে আয় আরও ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, গতকাল চীন সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাসায় কাজ করে গেছে পিয়ন, সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। এটা বাস্তব কথা। কী করে বানাল এই টাকা।
তিনি বলেন, যখন আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে প্রধানমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করলেও দ্রুতই জানা যায় তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীরের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলের খিলপাড়ায়। অনেকের কাছে তিনি ‘পানি জাহাঙ্গীর’ নামে পরিচিত। গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও শেষ সময়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
নির্বাচনী হলফনামায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও নোয়াখালী নিজ এলাকায় বাড়ি, জমি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ, ফ্ল্যাট, প্লটসহ বিপুল সম্পদের তথ্য উঠে আসে।