শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স্যের বিরুদ্ধে কৌশলে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক নিরীক্ষায় বীমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সরকারের ৫৪ লাখ টাকা ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। যদিও প্রমাণিত হওয়ার পর কোম্পানিটি ফাঁকির টাকা পরিশোধ করেছে, তবে এখনো সুদের টাকা অপরিশোধিত রয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স্য ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই অনিয়ম ধরা পড়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের নিরীক্ষায়। পরে ভ্যাট ফাঁকির অর্থ আদায় করতে উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠায় ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মো. নেয়াজুর রহমান এই বিচারাদেশ দিয়েছেন।
ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বনানীর বিটিএ টাওয়ারে অবস্থিত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স্য কোম্পানি দুই বছরে ৫০ লাখ ২৯ হাজার ৭৫০ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে এলেও কোম্পানিটিকে ছাড় দিয়ে আসছিল উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট। আর এই ভ্যাট পরিশোধ না করার জন্য দুই শতাংশ হারে জরিমানার বিধান রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিলে উদ্ঘাটন থেকে পরিশোধের দিন পর্যন্ত ২ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে। সেই অনুযায়ী উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স্য কোম্পানিকে ২ শতাংশ হারে ২০২৩ সালের আদেশ জারি হওয়া পর্যন্ত সুদ আরোপ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮০১ টাকা। আর সব মিলে ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩২ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, মূল ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে সানলাইফের সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। সুদ সংক্রান্ত ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের অনুকূলে জমা দিয়েছে। আরও সুদ বকেয়া রয়েছে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ভ্যাট কমিশনারের বিচারাদেশে বলা হয়েছে, সুদ ব্যতীত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স্য কোম্পানির ভ্যাট ফাঁকি ৫০ লাখ ২৯ হাজার ৭৫০ টাকা। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। আর সুদের টাকা আদায়যোগ্য বলেও বিচারাদেশ দিয়েছে উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট। তবে এই রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে প্রতিষ্ঠানটি আপিল করতে পারবে বলেও এই চিঠিতে বলা হয়েছে।