শেয়ারবাজারে এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্ত বিডি পেইন্টস লিমিটেডে ভয়াবহ অনিয়ম খুঁজে পেয়েছেন কোম্পানিটির নিরীক্ষক।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে দেখানো নগদ, ব্যাংক হিসাব, মজুদ পণ্যসহ কোন কিছুরই সত্যতা পাননি নিরীক্ষক। তাই কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে দেখানো তথ্যে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হতে পারে।
কোম্পানির মিথ্য তথ্যের কারণে সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে অনেক এবং উদ্যোক্তারা তাদের শেয়ার বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন অনেক টাকা।
বর্তমানে দুর্বল ব্যবসার কোম্পানিটির শেয়ার দর অনেক চড়া। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ২০ পয়সায়। শেয়ারটির দর এই পর্যায়ে উঠে আসার কোন কারণ খুঁজে পায়নি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। যদিও এরমধ্যে স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছেন এক উদ্যোক্তা। যিনি তার সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে চলে গেছেন।
কোম্পানির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, বিডি পেইন্টস কর্তৃপক্ষ কোম্পানি আইন অনুযায়ি হিসাব তৈরী করেনি। যাতে তিনি স্বশরীরে কোম্পানির নগদ অর্থ ও মজুদ পণ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেননি। যেখানে কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে নগদ ও মজুদ পণ্য নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হতে পারে।
এছাড়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষের ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ১৮১ ধারা অনুযায়ি, নগদ, ব্যাংক হিসাব, সম্পদ, দায়, কাঁচামাল ক্রয়, পণ্য বিক্রি এবং সব ব্যয়ের হিসাব রক্ষণাবেক্ষন করা উচিত বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। যা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ করেনি।
কর্তৃপক্ষ স্থায়ী সম্পদ নিয়ে সঠিক রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ করে না বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এছাড়া যাচাইয়ের সময় সম্পদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন। যে কারণে স্বশরীরে কোম্পানির স্থায়ী সম্পদের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
বিডি পেইন্টস বরিশালে বিএসসিআইসি এলাকায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় ভবন নির্মাণ করেছে। তবে ওই ভবন নির্মাণে প্রকৌশলী দিয়ে ‘নো কম্পিলেশন’ সনদ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
কোম্পানিটি বলেছে, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা পাওয়া যাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে। কিন্তু ওই অর্থ আদায়ে কোন সিকিউরিটি না থাকা সত্ত্বেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সঞ্চিতি (প্রভিশন) গঠন করেনি। এর মাধ্যমে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখানো হয়েছে।
এদিকে আর্থিক হিসাবে উল্লেখ করা ব্যাংকে থাকা অর্থের বিষয়ে নিশ্চিত হতে সংশ্লিষ্ট শাখায় চিঠি দিয়েছিল নিরীক্ষক। তবে ওইসব ব্যাংক থেকে কোন জবাব আসেনি। যাতে নিরীক্ষক ব্যাংকে দেখানো অর্থের বিষয়ে নিশ্চত হতে পারেননি।