পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যু করে কোম্পানির মূলধন বাড়াবে। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারে প্রিমিয়াম নেবে ১০৯ টাকা ৫৩ পয়সা, তাতে শেয়ারের অফার মূল্য দাঁড়ায় ১১৯ টাকা ৫৩ পয়সা। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ২৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা সংগ্রহ করবে।
নতুন শেয়ারের আবেদন ও টাকা জমা নেওয়ার সময়সূচি ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল টি। এটি ১৯ জুন শুরু হয়ে চলবে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সর্বজনীনভাবে ব্যবসা করা ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড ২৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ারের জন্য নতুন সাবস্ক্রিপশনের তারিখ ঘোষণা করেছে, যা মূলত এক বছর আগে নির্ধারিত ছিল।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একটি চিঠির পর হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী প্রস্তাবিত মূলধন বৃদ্ধি পুনরায় শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছে, কোম্পানির প্রকাশ অনুসারে সাবস্ক্রিপশনটি ১৯ জুন থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকিং চলাকালীন খোলা থাকবে।
প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করার উদ্দেশ্য হল- ব্যবসায়িক বৃদ্ধি, কাজের মূলধনের প্রয়োজনে অর্থায়ন করা এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা। তবে কোম্পানিটি তহবিলের অভাবে আধুনিকীকরণ প্রকল্প ও অন্যান্য উদ্যোগ সম্পন্ন করতে পারেনি। তাতে কোম্পানির কর্মকর্তাদের মতে, নিলামের বাজারে তার পণ্যের গড় বিক্রয় মূল্য হ্রাসের কারণে এর লেনদেন হ্রাস পাচ্ছে। তবে আদালতের আদেশের পর রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
এর আগে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের সাথে সমান আচরণ না করায় গত বছরের জুলাই মাসে ১০টি জাতীয় চায়ের শেয়ারের মালিক জাকির হোসেন সরকার নামে একজন বিএসইসি দ্বারা অনুমোদিত নতুন শেয়ার ইস্যু করায় কোম্পানির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে আদালত বিএসইসির সম্মতি বহাল রাখেন। বাজার নিয়ন্ত্রকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
যার কারণে শেয়ারহোল্ডারদেরই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, কারণ রেকর্ড ডেটের পরে আসন্ন বর্ধিত শেয়ারের সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ন্যাশনাল টির শেয়ারের দাম কমে যায় এবং এখন প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা অনিশ্চিত।
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার, আইসিবি, সাধারণ বীমা করপোরেশন, কোম্পানির পরিচালক ও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যের ভিন্ন ভিন্ন হারে নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে। মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের সংখ্যা হবে ২ কোটি ৩৪ লাখ। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৫ মে, ২০২৩।
বাংলাদেশ সরকার ও সাধারণ বীমা করপোরেশন বিদ্যমান প্রতি ১টি শেয়ারের বিপরীতে ৪.৪৩টি শেয়ার পাবে। এদের বিপরীতে মোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ১২০টি। অন্য পরিচালকদের বিপরীতে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৮২৬টি শেয়ার ইস্যু করা করা হবে। এরা বিদ্যমান ১টি শেয়ারের বিপরীতে ৩.২১টি করে শেয়ার পাবেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বিদ্যমান ১টি শেয়ারের বিপরীতে ২.৮৫ টি করে নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে, যার মোট সংখ্যা হবে ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার ৫৪টি।