1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

হতাশা ভারী হচ্ছে পুঁজিবাজারে

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪

সময়টা ভালো যাচ্ছে না দেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের। তবে এটা কয়েকদিন ধরে নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই মন্দার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট মহলসহ বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল, বাজেটে পুঁজিবাজার ভালো কিছু পাবে। কিন্তু ভালো কিছু তো পেলই না উল্টো আরও দুঃসংবাদ দিয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট। ফলে বাজারের বিনিয়োগকারীদের মন খারাপের পাল্লাও ভারী হয়েছে। দীর্ঘ হচ্ছে হতাশা।

বাজেটকে ঘিরে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা যে আশায় বুক বেধেছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নিজে পুঁজিবাজারকে ভালো করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যখন রাষ্ট্রপ্রধান থেকে পুঁজিবাজারকে ভালো করতে কোনো নির্দেশনা আসে তখন এই বাজার নিয়ে আশায় বুক বাধা মন্দের কিছু না। এই আশায় ভর করেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করেছিলেন এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো কিছু থাকবে। তবে ভালো কিছু থাকা তো দূরের কথা উল্টো প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব প্রস্তাবনা এসেছে এগুলোকে খারাপ খবর বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোদ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানও এই বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, পুঁজিবাজার যেহেতু একটি স্পর্শকাতর জায়গা, সেহেতু এই বাজার নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তাকে অন্তত জানানো হবে। বা কোনো ধরনের নীতিগত পরিবর্তন করলে সেটিও জানানো হবে। কিন্তু তাকে কোনো বিষয়েই জানানো হয়নি। এ বিষয়টিকে তিনি হতাশাজনক বলেও উল্লেখ করেছেন।

তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে লাগাতার দরপতন হচ্ছে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে। এতে ঈদের আগে বিনিয়োগকারীদের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে পুঁজিবাজার। যেসব বিনিয়োগকারীরা ঈদের আগে বাজার ভালো হবে এই আশায় ছিলেন তাদের আশায় গুঁড়েবালি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘এই বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছুই নেই। পুঁজিবাজারকে কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়নি বাজেটে। অথচ বাজেটের আগে কতজন কত কথা বলেছে যে পুঁজিবাজারের জন্য এই আসবে সেই আসবে। তাহলে এখন কোথায় গেল সেসব সুবিধা।’

তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার থেকে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার যা ছিল তা আরও কমানো হয়েছে। এতে করে কি নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইবে? আর যেগুলো তালিকাভুক্ত রয়েছে সেগুলো আরও নিরুৎসাহিত হবে। এরপর ব্যক্তি শ্রেণির লাভের ওপর নতুন করে যে কর আরোপ করা হয়েছে এটাও একটা নেতিবাচক খবর পুঁজিবাজারের জন্য। তাই সব মিলিয়ে আমি বলব এই বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছুই নেই।’

তথ্য অনুযায়ী, পতনের মধ্যে থাকা পুঁজিবাজারে পতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের পর এখনো পর্যন্ত লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ মে প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ৩৭১ পয়েন্ট। এরপর ২৩ মে সেই সূচক আরও কমে ৫ হাজার ৩১২ পয়েন্টে নেমে আসে। সেই যে পতন হয়েছে তা আর থামেনি। এই পতন ধারাবাহিকভাবে চলতে চলতে সর্বশেষ গতকাল ১১ জুন এসে সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭০ পয়েন্টে। এসময় মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকায়।
সংকট উত্তোরণে যেসব দাবি

পুঁজিবাজারের এমন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রত্যারের দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।

সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, চার বছর ধরে শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ। আমরা চার বছর ধরে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় পাচ্ছি না। এ পরিস্থিতিতে বাজারে সাপোর্ট দেওয়ার কথা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। এই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা রুগ্ণ হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকেই আমরা সমস্যার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। ১৪ বছরে বাজার স্থিতিশীল করতে পারিনি। একটি প্রজন্ম বাজারবিমুখ হয়ে পড়ছে। যে হারে বাজারে পতন হচ্ছে এর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

ডিবিএ সভাপতি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধন আয়ের ৫০ লাখ টাকার অধিক আয়ের ওপর স্তরভিত্তিক করারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, কোনো সিকিউরিটিজ বিনিয়োগের সময়কাল পাঁচ বছর অতিক্রম করলে উক্ত বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের প্রস্তাব করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে মন্দাবাজার পরিস্থিতি এবং আর্থিক সংকটে থাকা বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে মূলধন আয়ের ওপর থেকে করারোপের প্রস্তাব রহিতকরণের জন্য আমরা জোর সুপারিশ করছি।

শেয়ারবাজারের মূল্য সমস্যা কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিবিএ সভাপতি বলেন, শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা ভালো পণ্যের অভাব। গত ১৫ বছর ধরে ১-২টা ছাড়া আমাদের বাজারে ভালো কোনো কোম্পানি আসেনি।

মঙ্গলবারের বাজার

মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে মাঝে কিছু সময়ের জন্য সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। অবশ্য তা খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি, বরং লেনদেনের শেষদিকে পতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৭০ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বরের পর সূচকটি এখন সর্বেনিম্ন অবস্থা বিরাজ করছে। ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক পাঁচ হাজার ৬৯ পয়েন্ট ছিল।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় আট পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সূচক ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১১২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিকন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যারস এবং ওরিয়ন ফার্মা।

অপর পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কর্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ