সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এতে মূল্য সূচকও খানিকটা বেড়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দর পতনের আতঙ্ক কাটেনি। গতকালের দরবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বুধবারের তুলনায় প্রায় ৬৮ কোটি টাকার বেশি শেয়ার কেনাবেচা হলেও তা ৪০০ কোটি টাকার নিচে।
শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্বস্তি আছে। এক দিন বৃদ্ধির পর দশ দিনের পতন অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফলে এক বা দুই দিনের দরবৃদ্ধি দেখে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনতে সাহস করছেন না। এতে লেনদেনের পরিমাণও বাড়ছে না। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মূল্য ছিল ৩৭৪ কোটি টাকা।
তাদের মতে, সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে যেমন প্রায় সবার মধ্যে অস্বস্তি আছে। তবে এখনকার সবচেয়ে বড় অস্বস্তি আসন্ন জাতীয় বাজেট ঘোষণা নিয়ে। অনেকের শঙ্কা রিজার্ভ সংকট মেটাতে আইএমএফের শর্ত মেনে বিভিন্ন খাতের করছাড় কমাবে সরকার। নতুন করে করের বোঝা বাড়তে পারে। বড় শঙ্কা হয়ে দেখা দিয়েছে, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে মূলধনি মুনাফার ওপর কর আরোপের খবর। এ ছাড়া ব্যক্তি শ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ হজে যাচ্ছেন। ফলে একটা লম্বা সময় বাজারে তারা সক্রিয় থাকছেন না। এসবের কারণে এখনই বিনিয়োগ না করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন অনেক বিনিয়োগকারী।
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫২৫২ পয়েন্ট ছুঁই ছুঁই অবস্থানে উঠেছে। এ বৃদ্ধি সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহে সাকুল্যে সূচকটি ৬০ পয়েন্ট হারিয়েছে। শেষ হওয়া সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দুই দিনে সূচকটিতে ৮৩ পয়েন্ট যোগ হলেও বাকি তিন দিনে ১৪৩ পয়েন্ট হারায়। মোট ৩৮৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ার ও ফান্ডের মধ্যে ২১০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টির দর। গতকাল চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট এবং টেলিযোগাযোগ খাতের ১২ কোম্পানির মধ্যে ১০টি দর হারিয়েছে। ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ছিল মিশ্রধারা। বাকি সব খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, শুরুর দর পতনের পর প্রথম ঘণ্টা ক্রমাগত উত্থান-পতনে কাটে। তবে শেষের সাড়ে তিন ঘণ্টায় কিছুটা ইতিবাচক ধারা দেখা যায়। এ কারণে কোনো কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য হওয়ার ঘটনা ঘটেছে তুলনামূলক কম। ডিএসইতে লেনদেনের শেষে ১২ কোম্পানির শেয়ার ও ৫ মিউচুয়াল ফান্ড দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয় ও ক্রেতাশূন্য অবস্থায় ছিল। যদিও লেনদেনের মাঝে ১০২ কোম্পানির শেয়ার ও ২৪টি ফান্ড এমন অবস্থায় ছিল।