ভারতের শেয়ারবাজার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছার পর ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি আর ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনাকে পরোয়ানা না করে পাগলা ঘোড়ার মত ছুটছে পাকিস্তানের শেয়ারবাজার। বাড়ছে সব মূল্যসূচক। আজ পাকিস্তানের শেয়ারবাজার সূচকের রেকর্ড হয়েছে। সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক কেএসই-১০০।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) পাকিস্তানের বেঞ্চমার্ক সূচক কেএসই-১০০ আজ রেকর্ড ৭১ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে। সূচকটি আগের দিন বন্ধ হয়েছিলো ৭০ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে। আজ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৬৩১ পয়েন্ট বেড়ে ৭১ হাজার ৫৪১ পয়েন্টে উঠেছিলো। এরপর লেনদেন শেষে আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ৫২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৭১ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সূচকটি ৭৪.৩০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া চলতি বছরের এই সময়ের মধ্যে সূচকটি বেড়েছে ১০.৫০ শতাংশ।
এর আগে ভারতে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ৭৫ হাজার পৌঁছে সর্বকালের রেকড করেছে। দেশটির ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
পাকিস্তানের করাচি ভিত্তিক টপলাইন সিকিউরিটিজ হাউজের সিইও সোহেল মোহাম্মদ বলেন, আগামী মে মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন ঋণের রূপরেখা নিয়ে একমত হওয়ার আশা করছে পাকিস্তান। পাশাপাশি মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিগুলোর ভালো লভ্যাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
আকসির রিসার্চের গবেষণা পরিচালক আওয়াইস আশরাফ বলেছেন, পাকিস্তানে সৌদি বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা এবং মূল্যস্ফীতি কমার সম্ভাবনার কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং সার কোম্পানিগুলোর শেয়ার ভালো পরিমাণে লাভ দিবে এমন প্রত্যাশায় বাজারে বিনিয়োগকারীর আসছে।
চেজ সিকিউরিটিজের রিসার্চ ডিরেক্টর ইউসুফ এম ফারুক বলেন, রেকো ডিকে সৌদির বিনিয়োগের বিষয়ে মিডিয়াতে রিপোর্ট হয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের পরবর্তী আইএমএফ প্রোগ্রাম সুরক্ষিত করার সম্ভাবনা, সামনে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার কমার ইঙ্গিত রয়েছে। এসব কারণেই পুঁজিবাজারে উর্ধ্বমুখী গতি বজায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের চলতি হিসাব ইতিবাচক ও স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে বলেও মনে হচ্ছে। ক্রমাগত প্রতিকূল অর্থনৈতিক অবস্থার ফলে সম্পদ উল্লেখযোগ্যভাবে অবমূল্যায়িত হয়েছে।
নেক্সট ক্যাপিটাল লিমিটেডের গবেষণা পরিচালক শাহাব ফারুক বলেন, আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত তেলের মূল্য কমছে। এর মধ্যেও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। পাশাপাশি আইএমএফ প্রোগ্রামের বিষয়ে ইতিবাচক খবর এবং সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে আশাবাদের জন্য পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ছে বলে মনে করছেন তিনি।