জীবনজুড়ে নানামুখী ভাবনা। ব্যস্ততা ও অস্থিরতার শেষ নেই। ঘুমাতে গেলেও মনের ভেতর একটা চাপ কাজ করে। এটা বাকি রয়ে গেল, ওটায় আজও হাত দেওয়া হলো না, অমুক কাজে আজও যাওয়া হলো না—মনে ভিড় করে দীর্ঘ তালিকা! রাজ্যের ভাবনা নিয়ে বিছানায় গেলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাই স্বাভাবিক। যত ব্যস্ততাই থাকুক, ঘুমের আগে মনকে প্রশান্ত করে নিন। জেনে নেওয়া যাক ঘুমের আগে মনকে প্রশান্ত করার কিছু উপায়।
১. আগামী দিনের কাজের তালিকা করে রাখুন আগেই
ভাবনা দূরে রাখার উপদেশ দেওয়া যতটা সহজ, ভাবনা দূরে রাখা ততটাই কঠিন। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগেই তালিকাবদ্ধ করে রাখতে পারেন আগামী দিনের কাজগুলো। ভাবনার ভার কিছুটা হলেও হালকা হবে। মাথার ‘বোঝা’ কমবে।
২. দূরে থাক ভাবনার খোরাক
অসমাপ্ত কাজ, উত্তর না দেওয়া ই–মেইল, বাকি থেকে যাওয়া হিসাব—সবকিছুর ভাবনা থামিয়ে দিন ঘুমাতে যাওয়ার আগেই। ঘুমের আগে উত্তেজনাকর বই বা চলচ্চিত্র দেখবেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রলও করবেন না। টেলিভিশন বা অন্য কোনো স্মার্ট ডিভাইস (এমনকি মুঠোফোনও) শোবার ঘরে রাখবেন না। অ্যালার্ম দিতে পারেন টেবিলঘড়িতে। বিছানায় যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগেই বিদায় নিন মুঠোফোনের কাছ থেকে।
৩. চিন্তার সমাধান
চিন্তাভাবনার জন্য দিনের একটা সময় নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। তাতে রাতের চিন্তার ভাগ একটু হলেও কমবে। রাতে ঘুমানোর আগে এক শ থেকে উল্টো গুনতে থাকতে পারেন।
৪. পেশিগুলো শিথিল হতে দিন
শোবার পর গভীরভাবে শ্বাস নিন, সময় নিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। দেহের বিভিন্ন অংশের পেশিগুলো একে একে সংকুচিত করুন, শিথিল করুন। পায়ের আঙুল থেকে শুরু করতে পারেন। একে একে পায়ের পাতা, পা, হাঁটু, উরু, পেট, বুক, হাত, ঘাড়—সব অংশের পেশির সংকোচন ও প্রসারণ করুন। সবশেষে কপালের পেশি।
৫. ধ্যান করুন, কিংবা প্রার্থনা
ঘুমের আগে ধ্যান করতে পারেন। নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী প্রার্থনাও করতে পারেন। সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন সৃষ্টিকর্তার কাছে। মনকে শিথিলকারী এসব কাজের জন্য ঘুমের আগে আলাদা সময় রাখুন।
৬. নিজের সঙ্গে জবরদস্তি নয়
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার উপকারিতা অনেক। তবে রোজই ওই সময় আপনার ঘুম না–ও আসতে পারে। একেবারেই যদি ঘুম না আসে, তাহলে বিছানায় গিয়ে এপাশ-ওপাশ করার চেয়ে নিজেকে এমন কাজে নিযুক্ত করুন, যাতে দেহ-মনে শিথিলতা আসে। কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। আরামদায়ক চেয়ারে বসে প্রশান্তিকর অডিও ক্লিপ শুনতে পারেন। হালকা ধাঁচের বইও পড়তে পারেন।
সূত্র: ওয়েবএমডি