শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ব্যবসা অনেক কয়েক বছর যাবতই খারাপ যাচ্ছে। ২০১২ সালের পর কোম্পানিটির মুনাফা লোকসানের বৃত্তে আটকে থাকে।
এরপর ২০১৯ সালে মুনাফা কিছুটা ইতিবাচক হলেও পরের বছর থেকে আবারও লোকসানে আটকে যায়। ২০২১ সালে কোম্পানিটি বড় আকারে লোকসানে পড়ে। তবে ২০২২ সালে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও পরের বছর ২০২৩ সালে আবারও লোকসানের বৃত্তে চলে যায়।
অব্যাহত লোকসানের কারণে ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। ২০১৯ সালে বিনিয়োগকারীদের ৩ শতাংশ ক্যাশ এবং ২০২২ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল কোম্পানিটি। এরপর ২০২৩ সালে যথারীতি ‘নো ডিভিডেন্ড’।
এবার কোম্পানিটি আলোচনায় এসেছে আর্থিক প্রতিবেদনে ভুয়া মজুদ পণ্য দেখিয়ে। ২৬ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানির আর্থিক হিসাবে ৫১ কোটি টাকার মজুদ পণ্য দেখানো হয়েছে। যার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং কোম্পানিটির নিরীক্ষক।
কোম্পানির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ৫০ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মজুদ পণ্য দেখিয়েছে। যা তাদের পক্ষে সরেজমিনে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এমনকি বিকল্প কোন উপায়েও যাচাই করা যায়নি। এর কারণ হিসেবে নিরীক্ষক বলেছেন, নিরীক্ষককে দেরিতে নিয়োগ দেওয়া।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ি ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে অবন্টিত ডিভিডেন্ড হস্তান্তর করেনি সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ। এমনকি ওই ডিভিডেন্ড পৃথক হিসাবে জমাও রাখেনি।
সোনারগাঁও টেক্সটাইলে ১৫ লাখ টাকার অবন্টিত ডিভিডেন্ড রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। যা ৩ বছরের বেশি সময় ধরে অপ্রদানকৃত অবস্থায় থাকার পরেও বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ি ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে স্থানান্তর করেনি কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ।
২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করা এবং তা কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা ছিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু সোনারগাঁও টেক্সটাইলে ২১ লাখ টাকার এই ফান্ড থাকলেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তা বিতরণ না করে কর্মীদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন।
ব্যবসায়িক মন্দায় ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ। যে কারণে বিডিবিএল অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করেছে। রূপালি ব্যাংকও একই প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করছে।