ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) আমানতের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। তবে আমানত হিসাবের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
গত বছরের জুনে সুদহারের সীমা তুলে নেওয়ার পর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতের ওপর উচ্চ সুদহার দিচ্ছে। যে কারণে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। যা এক বছর আগে ছিল ৪৩ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এই সময়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৪৬ শতাংশ।
অন্যদিকে গত বছর আমানত হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ২২১টিকে। যা ২০২২ সালে ছিল ৫ লাখ ২১ হাজার ৫৫৬টি। সেই হিসাবে আমানত হিসাব কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
তিনি বলেন, দুটি কারণে আমানত হিসাবের সংখ্যা কমেছে। একটি হলো, এ খাতের ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির ঘটনায় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে অনেক আমানতকারী এনবিএফআই থেকে অর্থ তুলে নিয়েছেন। আরেকটি কারণ হলো, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে কিছু আমানতকারী তাদের অর্থ তুলে নিয়েছেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, কিছু আমানতকারী এনবিএফআই থেকে অর্থ তুলে নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখছেন, কারণ ব্যাংকগুলো এখন আমানতের ওপর উচ্চ সুদ দিচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের মধ্যে যারা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত অর্থ রেখেছিলেন, তারাও এখন সেই অর্থ তুলে নিচ্ছেন।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিইজি) চেয়ারম্যান ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আমানতকারীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই তারা অর্থ তুলে নিচ্ছেন, এতে আমানত হিসাবের সংখ্যা কমেছে।
তিনি বলেন, মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্ষুদ্র আমানতকারীরা সঞ্চয় ভাঙাতে বাধ্য হচ্ছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে, কারণ আমানতের সঙ্গে সুদ যোগ হয়েছে।
বাংলাদেশে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টি এনবিএফআই আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এখাতে ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা, যা এক বছর আগে ছিল ৭০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা।