অনেকেই আছেন অল্পতেই রেখে যান। কোনও কিছু মনমতো না হলে রাগ হওয়াই স্বাভাবিক। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু রাগ প্রকাশ করার ভঙ্গি একেকজনের একেকরকম। রাগের বহিঃপ্রকাশ কেমনভাবে হচ্ছে সেটাই দেখার। সেখান থেকে মূলত সমস্যা হতে শুরু করে। রাগের বহিঃপ্রকাশের বেশ কিছু ধরন রয়েছে। যেমন-
জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলা : অনেকে রেগে গেলে জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলেন। দরকারি জিনিস ভেঙে ফেলেন।
মুখে নানা কথা বলা : রাগ মাথায় চড়ে গেলে মুখে নানা উল্টাপাল্টা কথা বলতে শুরু করেন কেউ কেউ। এমনকি অকথ্য গালিগালাজ দিতেও ছাড়েন না। নিজের থেকে বড় বা সম্মানীয় পদে থাকা একজনকেও নিমেষে অসম্মান করে বসেন তারা।
কান্না : কেউ কেউ রেগে গেলে কেঁদে ফেলেন। অন্যকে আক্রমণ করেন না। বরং তার নিজের উপর দিয়েই রাগের ঝড়টা বয়ে যায়।
অন্য ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ: কেউ কেউ আবার সরাসরি ওই ঘটনায় রাগ প্রকাশ করেন না। বরং সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তাদের মোটে রাগতে দেখা যায় না। মুখ দেখে বোঝার উপায় থাকে না রাগ হয়েছে। কিন্তু রাগটি ভিতর ভিতর থেকে যায়। পরে অন্য ঘটনার মধ্যে দিয়ে রাগ প্রকাশ পেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত রাগ দেখালে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। যেমন- হার্ট রেট, ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়, যা হার্ট ও ব্রেনের জন্য ক্ষতিকর। স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় রাগ দেখানোর কারণে। ক্রনিক রাগের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আবার রাগের কারণে বেশ কিছু মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। রাগ দেখানোর কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্কগুলি খারাপ হতে থাকে। যা থেকে একটা সময় রাগী মানুষটি নিজেই একা হয়ে যান। এতে একাকিত্বের সমস্য়া দেখা দিতে শুরু করে। এই সমস্যা প্রতিবেশী, কর্মক্ষেত্রে বা স্কুল সব জায়গাতেই হতে পারে।
রাগ সামলাবেন যেভাবে
নিজেকে বোঝা: প্রথমেই নিজেকে বুঝতে হবে যে, রাগ একটা সমস্য়ার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। রাগের কারণে নানাদিকে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে, এটা বোঝা জরুরি। এমনকি নিজেরও মানসিক ও শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেটাও বুঝতে হবে। এই উপলব্ধিই যিনি রেগে যাচ্ছেন তাকে সমাধানের দিকে অনেকটা এগিয়ে দেবে।
গভীর শ্বাসের ব্যায়াম: রাগের অনুভূতি যখনই হয়, তখন গভীর শ্বাসের ব্যায়াম বা ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বেশ কার্যকর। নাক দিয়ে গভীর শ্বাস নিয়ে কিছুক্ষণ পর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এতে সেই মুহূর্তের রাগ অনেকটা কমে আসে।
বিপরীত দিকে গোনা: দশ থেকে একের দিকে গোনা যেতে পারে। এতে মন রাগের কারণ থেকে কিছুটা সরিয়ে আনা যায়।
ডায়েরি লেখা: ডায়েরি লেখার অভ্য়াস এই ক্ষেত্রে অনেকটা সাহায্য করতে পারে। নিজের অনুভূতির কথা লিখে রাখলে রাগের মারাত্মক প্রকাশ অনেকটা কমে আসে।
মনোযোগের অভ্যাস: মনোযোগের অভ্য়াস রাগ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে। নিয়মিত ধ্যান, যোগাসন ও গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে মনোযোগের অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে।
পেশাদারের সাহায্য: নিজে থেকে রাগ সামলাতে না পারলে পেশাদার কারও সাহায্য নিন।