মাইগ্রেন হলেই মাথা যন্ত্রণা হয়। তবে, সব ধরনের মাথা যন্ত্রণা কিন্তু মাইগ্রেন নয়। মাইগ্রেনের যন্ত্রণা সাধারণত মাথার এক পাশ থেকে শুরু করে কোনো চোখ এবং ঘাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। সাথে বমি বমি ভাব, চড়া আলো বা শব্দ সহ্য করতে না পারার মতো লক্ষণও দেখা যায় কারো কারো ক্ষেত্রে। পরিবারের কারো এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও তা সঞ্চারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীদেরই ‘মাথাব্যথা’ বেশি। শুধু তাই নয়, মাইগ্রেনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে ঋতুচক্রেরও।
মাইগ্রেনের সমস্যায় নারীদের আক্রান্ত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু হরমোন এবং জিন। মাইগ্রেনের সমস্যায় হরমোন এবং জিন কিভাবে প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে একাধিক গবেষণা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মাইগ্রেনের যন্ত্রণার মূলচক্রী হলো ইস্ট্রোজেন। এই হরমোনটি স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের জটিল সমস্ত ক্রিয়াকলাপে অংশ নেয়া রাসায়নিকের ওপর প্রভাব ফেলে। সেখান থেকেই মাইগ্রেনের যন্ত্রণার সূত্রপাত।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত মেয়েদের এই সংক্রান্ত সমস্যা খুব একটা প্রকট না হলেও ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাইগ্রেন নিজের ছাপ ফেলতে শুরু করে। প্রথমবার ঋতুস্রাব হওয়ার সময়ে অনেকেই মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন। শুধু তা-ই নয়, যত দিন পর্যন্ত মেয়েরা ঋতুমতী থাকেন এবং তাদের সন্তানধারণের ক্ষমতা থাকে, তত দিন পর্যন্ত মাইগ্রেনের সমস্যা পিছু ছাড়ে না। ২০১৯ সালে গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডিতে বলা হয়েছে, ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের মাইগ্রেনে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস বেশি।
এই সমস্যার চিকিৎসা কি আদৌ সম্ভব?
মাইগ্রেন হলে অনেকেই যন্ত্রণা প্রশমনের ওষুধ খান। এই ধরনের ওষুধে সাময়িক আরাম মিলতে পারে। তবে, মাইগ্রেনের চিকিৎসার একমাত্র উপায় ওষুধ নয়। তাড়াতাড়ি রোগ নিরাময় করতে গেলে প্রথমেই যন্ত্রণার উৎস খুঁজে বের করা প্রয়োজন। প্রচণ্ড রোদ লাগলে, ঘুম কম হলে কিংবা অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকেও মাইগ্রেন হতে পারে। তাই কী কারণে মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে তা বুঝে, সেই অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা