অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ইসরাইলের বিমান ও স্থল হামলায় নারী-শিশুসহ শত শত ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। ঘনবসতিপূর্ণ রাফাহ শহরে ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের পরিকল্পনার ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী নিন্দা-প্রতিবাদ সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর সরকার এই বর্বর হামলা চালালো।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাফাহ শহরে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ও মসজিদে ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় এ পর্যন্ত শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত এবং কমপক্ষে ২৩০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে কয়েক ডজন মানুষ।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েন, ইসরাইলি হামলায় যে বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য গাজার হাসপাতালগুলোর নেই।
গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণে ঘরবাড়ি হারানো প্রায় ২৪ লাখ লোকের বেশিরভাগই এখন অবস্থান করছেন রাফাহ শহরে। আজ ভোররাতে ইসরাইলি হামলার পর শহরটির বিভিন্ন এলাকা থেকে আগুন ও ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। রাফাহর ১৪টি বাড়ি এবং তিনটি মসজিদে চালানো হয় এই বর্বর বিমান হামলা।
হামলার পর এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী জানিয়েছে, আজ ভোররাতে তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চল ও সাবুরা এলাকায় ‘সন্ত্রাসী’ অবস্থানে সিরিজ হামলা চালিয়েছে।
প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিক এখন অবস্থান করছে এই ছোট শহরটিতে। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে থাকা রাফা শহরটিতে অধিকাংশ মানুষ বসবাস করছে তাঁবুতে। শহরটিতে তাঁবু, খাবার, পানি ও ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যে। ক্রমেই দুর্লভ হয়ে পড়ছে মানবিক চাহিদার পণ্যগুলো।
ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ শহরে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিতে গত শনিবার ইসরাইলি বাহিনীর প্রতি নির্দেশ জারি করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরাইল রাফাহ শহরে স্থল অভিযান শুরু করলে তেল আবিবের সঙ্গে পণবন্দি মুক্তির আলোচনা বাতিল করা হবে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের কাছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলায় ১১ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হওয়ার পর রাফাহ শহরে এই হামলা চালানো হলো। পার্সটুডে