লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে পাঁচ দালালকে আটক করেছেন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্যরা। পরে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সোপর্দ করলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ক্যথোয়াইপ্রু মারমা এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ওমর ফারুক (২৭), আমিনুল (২৩), রহমান আল আজাদ (৩৭), সুজন (২৩) ও আকরাম হোসেন (২৭)।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রিনা বেগম ও আয়েশা খাতুনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা মজুচৌধুরীর হাট এলাকা থেকে হাসপাতালে এসেছেন। এখানে পাঁচ টাকায় টিকেট কেটে ডাক্তার দেখিয়েছেন। এরআগে দুইজন লোক তাদের কাছ থেকে রোগের বিষয়ে জানতে চায়। তারা ডাক্তার কিংবা নার্স ছিলেন না। এজন্য ওই লোকগুলোকে তারা কোনো কিছুই বলেননি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন জানায়, হাসপাতাল এলেই রোগীরা দালাল চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। এতে নানান ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। এতে তারা মোটা অঙ্কের কমিশন পান। দিন দিন দালালদের দৌরাত্ম বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এনএসআই লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের অভিযানটি প্রশংসনীয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কারাগার থেকে বের হয়ে ফের একইভাবে রোগীদের হয়রানি করবে। এজন্য দালালদের চক্রটি পুরোপুরি নির্মূল করা প্রয়োজন। দালালদের দৌরাত্ম কমলে এখানেই রোগীরা ভালো চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, অভিযানের সময় ৯ জনকে আটক করা হয়। এরমধ্যে পাঁচজন দোষী প্রমাণিত হয়েছে। তারা নিজেরাও দোষ স্বীকার করেছেন। তাদের প্রত্যেককে ১০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা এসব দালালদের কারণে হয়রানির শিকার হয়। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
জেলা সিভিল সার্জন আহমেদ কবীর বলেন, আমাদের হাসপাতালে জনবল কম। নিরাপত্তার ব্যবস্থাও তেমন নেই। দালাল চক্রের সদস্যরা স্থানীয় বাসিন্দা। তারা হাসপাতালের স্টাফদের কথাও শুনে না।
তিনি আরও বলেন, দালালের দৌরাত্ম কমানোর বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলা হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও এনএসআইয়ের সাহায্য চেয়েছিলাম। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করলে আশা করি দালালের দৌরাত্ম কমে যাবে।