দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর বেড়েই চলেছে। এ যেন চোখ রাঙ্গিয়ে চলার মতো। কোনভাবে থামতে চাইছে না কোম্পানিটির শেয়ারদর। তবে কি সেই সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল এবং আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ন্যায় কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ানো হচ্ছে? প্রশ্ন বিনিয়োগকারীদের।
যেখানে আলিফ গ্রুপ নিজেদের কোম্পানিগুলোর বেহাল দশা, সেখানে আবার অচল এক কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলকে কিনে নিয়েছে গ্রুপটি। আর এই খবরে ১ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ারের দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ টাকায়। অর্থাৎ শুধু মালিকানা পরিবর্তনের খবরেই কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৯ টাকা ৫০ পয়সা বা ৬৩৩ শতাংশ। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার ১০ টাকা ২০ পয়সায় ফ্লোরে আটকে আছে। এখন বিনিয়োগকারীরা চাইলেও শেয়ারটি বিক্রি করতে পারছেন না।
একইভাবে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ১৩ টাকার শেয়ার ২০২২ সালের প্রথম দিকে সর্বোচ্চ ২২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। পরবর্তীতে কমে ১৩ টাকায় নেমে যায়। বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে ১৩ টাকা ৩০ পয়সায়। বিনিয়োগকারীরা শেয়ারটি নিয়ে এখন হাঁসফাঁস করছে। বিক্রি করতে চাইলেও বিক্রির কোনো উপায় নেই।
আলোচিত সেই গ্রুপেরই আরেক কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর হঠাৎ চোখ রাঙ্গিয়ে চলছে। গত ২৫ মে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫৩ টাকা ৪০ পয়সায় ফ্লোর প্রাইসে। এরপর থেকে টানা শেয়ারদর বেড়ে আজ বুধবার (০৭ জুন) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮০ টাকা ২০ পয়সায়। মাত্র নয় কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৬ টাকা ৮০ পয়সা বা ৫০ শতাংশ।
কোম্পানিটির এমন অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষও কোনো কারণ ছাড়াই কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে বলে ডিএসইকে জানিয়েছে। যদিও বাজারে জোর গুঞ্জন রয়েছে কোম্পানিটির চিহ্নিত পরিচালকরা কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, একই গ্রুপের অন্য দুই কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি করে যেভাবে বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল কারসাজি চক্র, ঠিক একইভাবে আবারও এই কোম্পানিটির শেয়ারও বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে কারসাজি চক্রটি। সেই লক্ষ্যেই কোন কারণ ছাড়াই শেয়ারটি দর আকাশে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বিডি অটোকারস ও লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগে ৫ ব্যক্তি ও ৬ প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তাদের মধ্যে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিমুল ইসলাম, তার বাবা ও আলিফ গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, তার মা, স্ত্রী ও দুই কোম্পানির নামে অবৈধভাবে শেয়ার কেনাবেচা করায় দুই কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।