গত বছরের ২৮ জুলাই শেয়ারের অব্যাহত পতন ঠেকাতে দ্বিতীয় দফায় তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২৯৫টিতে। এক সপ্তাহে আগে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ফ্লোর প্রাইসের সংখ্যাকমে দাঁড়িয়েছিল ২৫৩টিতে। বর্তমানে তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ২০৮টিতে। স্টকনাও সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সবচেয়ে বেশি ৯টি কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে।চলতি সপ্তাহের তিন দিনেও প্রতিদিন ৩-৪টি করে কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে লেনদেন হয়েছে।
এতে দেখা যায়, খাতভিত্তিক ফ্লোর প্রাইস ভাঙ্গার শীর্ষে উঠেছে বিমা খাত। এখাতে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসের চৌহদ্দিতে আটকে ছিল। এখন সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইস পেরিয়ে লেনদেন হচ্ছে। আশার কথা হলো, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটও ফ্লোর প্রাইসের জগদ্দল পাথর ছেড়ে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরতেশুরু করেছে।
এছাড়া, বস্ত্র খাতের বহু শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে এখন লেনদেন হচ্ছে। এখাতে এখন প্রায় প্রতিদিনই ফ্লোর প্রাইসের গন্ডি ভেঙ্গে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার।
তবে এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে ভেঙ্গে লেনদেন হওয়া কোম্পানির শেয়ারও ফের ফ্লোর প্রাইসে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। এরমধ্যে ব্যাংক খাতের কোম্পানিই বেশি। ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো ভালো ডিভিডেন্ড ও মুনাফা দেখানোর পরও ফ্লোর প্রাইসের গন্ডি থেকে বের হতে পারছে না। যদিও দুই-এক দিন ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে দু-চারটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়, দুই-এক দিন পর ফের ফ্লোর প্রাইসের সীমানায় ফিরে যায়।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি মাসের লেনদেনের শুরুতে ফ্লোর প্রাইসে শেয়ার ছিল ২৫৬টি। এপ্রিলের শুরুতে এই সংখ্যা ছিল ২৯৫টি। ডিসেম্বরে প্রত্যাহারের পর গত মার্চের শুরুতে ১৬৭টি শেয়ারের ফের ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর গত ১৯ মার্চ ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসা শেয়ার সংখ্যা বেড়ে সর্বোচ্চ ৩০৪টিতে উন্নীত হয়।
তবে এখনো ফ্লোর প্রাইসের থাকা কোম্পানিরই প্রাধান্য বেশি দেখা যায়। এখনো তালিকাভুক্ত ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০৮টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসের সীমানায় আবদ্ধ।
এতে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের তালিকাভুক্ত ৩৫ শেয়ারের ২৮টিই ফ্লোর প্রাইসে। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩টির মধ্যে ২০টি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২৩টির মধ্যে ১৩টি, প্রকৌশল খাতের ৪২টির মধ্যে ২৩টি, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩২টির মধ্যে ১৯টি, বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৩৭টি, মিউচুয়াল ফান্ডের ৩৬টির মধ্যে ৩৩টি এবং টেলিযোগাযোগ খাতের ৩টি শেয়ারের সবক’টি ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে।
এরমধ্যে বীমা খাতের ৫৭ শেয়ারের মধ্যে ৪১টি ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২১ শেয়ারের মধ্যে ১৪টি, তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ১১টির মধ্যে ৯টি এবং বিবিধ খাতের ১৫টির মধ্যে ৯টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে।