শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম এবং অস্বাভাবিক মুনাফা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি আলোচিত নাম সী পার্ল হোটেল। ২০১৯ সালে তালিকাভুক্তির বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় দেখা যায় ৪৪ পয়সা। তারপর ২০২০ সালে লোকসানে চলে যায়। এরপর ২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি মুনাফা আসে ৬১ পয়সা। তারপর ২০২২ সাল থেকে কোম্পানিটি আলাদিনের চেরাগের সন্ধান পেতে শুরু করে। এবছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৩৪ পয়সা।
অন্যদিকে, তালিকাভুক্তির বছর ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড দেয় ৫ শতাংশ বোনাস। তারপর ২০২০ সালে ডিভিডেন্ড নেমে যায় ১ শতাংশে। যা ২০২২ সালেও অব্যাহত থাকে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে কোম্পানিটি আলাদিনের চেরাগ পেতে শুরু করে। এবছর কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড উঠে যায় এক লায়ে ১৫ শতাংশে। আর চলতি অর্থবছরে কোম্পানিটির ঘরে আলাদিনের চেরাগ যেন আরো নতুন করে জেঁকে বসেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা আসে ১ টাকা ২৭ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ০৯ পয়সা।
অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২২) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা আসে ২ টাকা ২৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল মাত্র ৮১ পয়সা। দুই প্রান্তিক মিলে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৩ টাকা ৫০ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল মাত্র ৭২ পয়সা।
অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির মুনাফায় আরও চমক দেখা যায়। তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় আসে ৩ টাকা ১৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল মাত্র ৩৫ পয়সা। তিন প্রান্তিক মিলে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৬ টাকা ৬৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল মাত্র ১ টাকা ০৭ পয়সা।
এদিকে, মুনাফার জৌলুস আসার আগে আগেই কোম্পানিটির শেয়ার দামে দেখা যায় তেলেসমাতি। যেখানে এক বছর আগে শেয়ারটি ৪২-৪৩ টাকায় লেনদেন হয়েছে, বছরের ব্যবধানে সেটি ৩২০ টাকা পার হয়ে যায়।
তবে তৃতীয় প্রান্তিকের মুনাফা বড় উল্লম্ফন দেখা গেলেও শেয়ার দামে তেমন ঝলক দেখা যায়নি। কারণ মুনাফার খবর আসার আগেই শেয়ারটির দাম আকাশের চুড়ায় উঠে গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকের মুনাফা আসার পর কোম্পানিটির শেয়ার ৩০০ টাকার আশে-পাশেই লেনদেন হয়।
কিন্তু আজ রোববার (৩০ এপ্রিল) কোম্পানিটির শেয়ার ২৬২ টাকা ৪০ পয়সায় ক্রেতাশুন্য হয়ে পড়ে। আজ লেনদেনের শেষদিকে কোম্পানিটির হাজার হাজার বিক্রেতা শেয়ার বিক্রি করতে চাইলেও ক্রেতার অভাবে তারা শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাহলে শেয়ারটির কারসাজিকারীরা কী চড়া দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাঁধে শেয়ারটি চাপিয়ে চম্পট দিতে শুরু করেছেন?