1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ অপরাহ্ন

সরকারের চাল আমদানিকে ‘হুমকি’ মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০
Rice

এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হলেও মিল মালিকরা চুক্তিমূল্যে সরকারকে ঠিকমতো চাল সরবরাহ করেননি। চালকল মালিকরা সরকারকে চাল না দিলে প্রয়োজনে আমদানি করা হবে বলে বেশকিছু দিন ধরেই হুঁশিয়ার করে আসছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছেন। সরকারের এই চাল আমদানিকে থ্রেট (হুমকি) মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, কোভিড-১৯ এর সময় সারাবিশ্বেই খাদ্য সংকটের একটা আশঙ্কা আছে। সরকার যদি চাল আমদানি করে তাহলে দেশের খাদ্যের মজুত আরও শক্তিশালী হবে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছর সাড়ে ২০ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। সে অনুযায়ী ৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজিতে দুই লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে আট লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনার কথা ছিল। তবে ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে কৃষক সরকারকে ধান দেয়নি। ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে চালের দামও বেশি। ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে মিলাররা চাল সরবরাহ করতে পারছেন না। যে কারণে বারবার তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে শেষ পর্যন্ত চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

সরকারের আরেকটি সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১০ লাখ ৭ হাজার টন চালের মজুত আছে। গত বছর ছিল ১৫ লাখ ২১ হাজার টন।

চাল আমদানি ও সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ অটো রাইস মিলস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি (দিনাজপুর) শহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কৃষকরা সরকারকে যে ৮ লাখ টন ধান দিতে চেয়েছিল তার ১০ ভাগও দেয়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দামও বেশি। ফলে সরকারি মূল্যে চাল সরবরাহ করতে গেলে মিলারদেরকে লোকসান দিতে হচ্ছে। তবে আমরা সরকারকে এখনো নিরাশ করিনি। লোকসান হলেও আমরা সরকারকে ৭৫ ভাগ চাল দেব। তা নাহলে আমাদের বদনাম হবে।

তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের দিকেও সরকারকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান অটো রাইস মিলের এই মালিক। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকার যদি মিল মালিকদের প্রণোদনা/ভর্তুকি বা ইনসেনটিভের ব্যবস্থা করে তাহলে ব্যবসায়ীরা স্বস্তি পাবে।

তবে সরকারের চাল আমদানিকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখছেন শহিদুর রহমান পাটোয়ারী। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, করোনার কারণে সারা পৃথিবী তছনছ হয়ে গেছে। ফলে অনেক দেশেই খাদ্য ঘাটতিরও একটা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে দিয়ে সরকারিভাবে হোক আর বেসরকারি ভাবে হোক দ্রুত চাল আমদানি করা উচিত। তিনি বলেন, সরকারের ঘরে থাকুক আর ব্যবসায়ীদের ঘরে থাকুক-যেখানেই থাকুক না কেন, দেশের মধ্যে চাল থাকলে টেনশন ফ্রি থাকা যাবে।

কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সরকারের প্রয়োজনে চাল আমদানি করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ আমরাতো সরকারকে চাল দিতে পারছি না। বাজারে মোটা ধানও পাওয়া যাচ্ছে না। আর যাওবা পাওয়া যাচ্ছে দাম বেশি। সে ধান কিনে সরকারি মূল্যে চাল দিতে গেলে প্রতি কেজিতে চার টাকা লোকসান দিতে হয়।’

তবে সরকারের যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু চাল আমদানির পরামর্শ জয়নালের। তিনি মনে করেন, বেশি আমদানি করলে দেশের মধ্যে বাজার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

বগুড়ার শেরপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সরকারকে চাল সরবরাহের দিক থেকে শেরপুরের মিলাররা সবসময় এগিয়ে থাকে। কিন্তু এবার যে সমস্যাটা হচ্ছে সেটো হলো মোটা ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া মোটা যে ধান পাওয়া যাচ্ছে সে ধানের চাল কোয়ালিটি-সম্পন্ন নয়। কারণ কালবৈশাখীর ঝড়ে ওইসময় ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এই ধানের যে চাল হচ্ছে সেটা সরকারি গুদামে অ্যালাউ (অনুমতি) করবে না। যে কারণে আমরাও চাল সরবরাহ করতে পারছি না।’

তিনি বলেন, চাল আমদানি করলে মিল মালিকদের কোনো ক্ষতি নেই। যারা ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে ধান কিনে মজুত করেছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল আমদানি করতে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গত বৃহস্পতিবার তাকে উদ্ধৃত করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে কিছু মিল মালিক ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করতে গড়িমসি করে সরকারের কাছে চালের দাম বাড়ানোর দাবি তোলেন। অনেক মিল মালিক চুক্তিমূল্যে চাল না দেয়ায় মজুতের লক্ষ্য পূরণ করা নিয়ে বিপাকে পড়ে সরকার।

এরপর শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত ৭ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারসাজি ঠেকাতে ও চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রয়োজনমতো চাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ