সদ্য বিদায়ী ২০১৯-২০ হিসাববছরের প্রথম নয় মাসে বস্ত্রখাতে বেশিরভাগ কোম্পানির মুনাফাই কমেছে। অন্যদিকে, করোনা ভাইরাসের কারণে আালোচ্য হিসাববাছেরর শেষ প্রান্তিকের মুনাফাও ইতিবাচক থাকার সম্ভাবনা কম। এদিকে, এখাতে সিংহভাগ কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে নামেমাত্র। এসব কারণে বস্ত্রখাতের কোম্পানিগুলোর আসন্ন লভ্যাংশ নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বস্ত্রখাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে গতবছর (২০১৮-১৯) ১৫ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিয়েছিল ১৩টি কোম্পানি। কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্টাইলক্রাপ্ট লভ্যাংশ দিয়েছিল ১৫০ শতাংশ স্টক, রহিম টেক্সটাইল ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক, এ্যাপেক্স স্পিনিং ২০ শতাংশ ক্যাশ, স্কয়ার টেক্সটাইল ২০ শতাংশ ক্যাশ, এমএল ডাইং ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক, কুইন টেক্সটাইল ৮ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক, হওয়েল টেক্সটাইল ১৭ শতাংশ ক্যাশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ৭ শতাংশ ক্যাশ ও ৯ শতাংশ স্টক, এনভয় টেক্সটাইল ১৫ শতাংশ ক্যাশ, মতিন স্পিনিং ১৫ শতাংশ ক্যাশ, এস্কয়ার নিট ১৫ শতাংশ ক্যাশ, আরগন ডেনিমস ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক, সায়হাম টেক্সটাইল ১৫ শতাংশ ক্যাশ এবং রিং টেক্সটাইল ১৫ শতাংশ স্টক। কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিদায়ী হিসাববছরের ৯ মাসে বেশিরভাগ কোম্পানিরই মুনাফায় ভাটা পড়েছে। এছাড়া, সিংহভাগ কোম্পানির রিজার্ভের অবস্থা নাজুক। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ নিয়ে চলছে টানাপোড়ন।
কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে মূলধনের তিনগুণ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ৩ টাকার বেশি রিজার্ভ রয়েছে এমন কোম্পানি মাত্র ৪টি। কোম্পানিগুলো হল-এ্যাপেক্স স্পিনিং, এইচআর টেক্সটাইল, এস্কয়ার নিট ও স্কয়ার টেক্সটাইল। এর মধ্যে এ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৪ টাকা ৩২ পয়সা, স্কয়ার টেক্সটাইলের ৩ টাকা ৭০ পয়সা, এইচআর টেক্সটাইলের ৩ টাকা ৩৯ পয়সা এবং এস্কয়ার নিটের ৩ টাকা ১৯ পয়সা।
অন্যদিকে, শেয়ারপ্রতি ২ টাকার বেশি রিজার্ভ রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ৮টি। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সায়হাম কটনের শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ ২ টাকা ৯১ পয়সা, প্রাইম টেক্সটাইলের ২ টাকা ৮৪ পয়সা, রহিম টেক্সটাইলের ২ টাকা ৭৯ পয়সা, মালেক স্পিনিংয়ের ২ টাকা ৭৩ পয়সা, সায়হাম টেক্সটাইলের ২ টাকা ৫৩ পয়সা, মতিন স্পিনিংয়ের ২ টাকা ৩৪ পয়সা, শাশা ডেনিমসের ২ টাকা ২৮ পয়সা এবং এনভয় টেক্সটাইলের ২ টাকা ১৬ পয়সা।
আর শেয়ারপ্রতি ১ টাকার বেশি রিজার্ভ রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যাও ৮টি। কোম্পানিগুলোর মধ্যে হাওয়েল টেক্সটাইলের ১ টাকা ৯৮ পয়সা, হামিদ ফেব্রিকসের ১ টাকা ৯৪ পয়সা, স্টাইলক্রাপ্টের ১ টাকা ৬৪ পয়সা, তসরিফা টেক্সটাইলের ১ টাকা ৫১ পয়সা, এমএল ডাইংয়ের ১ টাকা ৩৭ পয়সা, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ১ টাকা ৩০ টাকা, নিউ লাইন টেক্সটাইলের ১ টাকা ২৯ পয়সা এবং আরগন ডেনিমের ১ টাকা ৮ পয়সা।
অবশিষ্ট ৩৬টি কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে শেয়ারপ্রতি ১ টাকার কম। অধিকাংশ কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে নামেমাত্র। এরমধ্যে ৩টি কোম্পানির রিজার্ভ নেতিবাচক। কোম্পানিগুলো হল-দুলামিয়া কটন, আরএন টেক্সটাইল ও মেট্রো স্পিনিং মিলস।
তবে বস্ত্রখাতে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির রিজার্ভ ও লভ্যাংশের রেকর্ড বেশ ভাল। এখাতে স্বল্প মূলধনী কোম্পানি রয়েছে ৪টি, যেগুলোর শেয়ার সংখ্যা এক কোটিরও কম। কোম্পানিগুলো হল-এ্যাপেক্স স্পিনিং, দেশ গার্মেন্টস, রহিম টেক্সটাইল এবং দুলামিয়া কটন। এ্যাপেক্স স্পিনিং, দেশ গার্মেন্টস ও রহিম টেক্সটাইলের লভ্যাংশ ঘোষণার রেকর্ড বরাবরই ভালো। এরমধ্যে এ্যাপেক্স স্পিনিং ও রহিম টেক্সটাইলের রিজার্ভও অনেক ভালো।
উল্লেখ্য, স্বল্প মূলধনী ৪ কোম্পানির মধ্যে দেশ গার্মেন্টসের শেয়ারের পরিমাণ ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৪টি, দুলামিয়া কটনের ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০টি, এ্যাপেক্স স্পিনিংয়ের ৮৪ লাখ এবং রহিম টেক্সটাইলের ৯৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৮৩টি।