1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন

রপ্তানি আয়ে বড় উত্থান

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০২০
Export-

করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ায় গত এপ্রিলে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় তলানিতে ঠেকেছিল। তবে মে মাসে রপ্তানি আয় কিছুটা বেড়েছে এবং জুনে তার চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। আর নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি করে দেশ যে আয় করেছে, তা গত অর্থ বছরের যে কোনো মাসের চেয়ে বেশি।

তবে সঙ্কট এখনই কেটে যাচ্ছে বলে মনে করছেন না রপ্তানিকারকরা। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারী থেকে অর্থনীতি উদ্ধারে গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করতে হবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৯১ কোটি (৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার আয় হয়েছে। এই অঙ্ক গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

এর মধ্য দিয়ে সাত মাস পর বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল রপ্তানি আয়ে। এর পর ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি কমছিল।

কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করে গত মার্চ মাস থেকে, এপ্রিলে রপ্তানি কমে মাত্র ৫২ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল, যা ছিল রেমিটেন্সের চেয়েও কম। এপ্রিল মাসে গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছিল ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বিধিনিষেধ শিথিল করে কলকারখানা চালুর পর মে মাসে রপ্তানি বেড়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়; তবে প্রবৃদ্ধি কমেছিল ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানি আয় বেড়ে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারে উঠলেও প্রবৃদ্ধি কমেছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির প্রধান কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরবাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির প্রধান কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরের যে কোনো মাসের চেয়ে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ।

মহামারীর প্রভাব পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগের মাস মার্চে পণ্য রপ্তানি থেকে ২৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ; যদিও প্রবৃদ্ধি কমেছিল ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারি মাসে আয় হয়েছিল ৩৩২ কোটি ২৩ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি কমেছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ। জানুয়ারিতে আয় হয় ৩৬১ কোটি ৭৩ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি কম ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তার আগের মাস ডিসেম্বরে ৩৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় হয়েছিল; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। নভেম্বর, অক্টোবর এবং সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয় যথাক্রমে ৩০৫ কোটি ৫৮ লাখ, ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ এবং ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য। ওই তিন মাসেও প্রবৃদ্ধি কমেছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ, ১৯ দশমিক ১৯ এবং ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।

অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর মহামারীর মধ্যেও রপ্তানি আয় ঘুরে দাঁড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করছেন।

তিনি বলেন, “এখানে একটি বিষয় কিন্তু আমাদের সবার মনে রাখতে হবে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব শুরু হওয়ার আগে থেকেই কিন্তু আমাদের রপ্তানি আয়ে খারাপ পরিস্থিতি ছিল। প্রতি মাসেই প্রবৃদ্ধি কমছিল।

“মহামারী না আসলেও কিন্তু গত অর্থবছরে আমাদের রপ্তানিতে ৮/৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কম হত। কোভিড-১৯ এর ধাক্কায় সেটা ১৭ শতাংশ হয়েছে।”

তিনি বলেন, “জীবন-জীবিকা একসঙ্গে চালানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে পৃথিবীর সব দেশের অর্থনীতিই সচল হচ্ছে। আমাদেরও সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেই পথেই অগ্রসর হতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।”

ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প থেকে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশই এসেছে পোশাক খাত থেকে।

জুলাই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। জুলাইয়ে উভেন পোশাক রপ্তানি ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমলেও নিট পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফনে খুশি হলেও সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা খুবই আশাব্যঞ্জক এবং ভালো খবর আমাদের জন্য। এই কঠিন সময়েও প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের মত রপ্তানি আয় দেশে এসেছে।

“তবে এতে যে সঙ্কট কেটে যাচ্ছে সেটা কিন্তু নয়। জুলাই মাসে যে রপ্তানি আয় দেশে এসেছে তা মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে যে সব অর্ডার স্থগিত করেছিল বায়াররা, সেগুলাই পুনরায় অর্ডার দেওয়ায় রপ্তানি হয়েছে। আমাদের হাতে নতুন অর্ডার কম আসছে। সে কারণে আগামী অগাস্ট-সেপ্টেম্বর খুব ভালো যাবে বলে মনে হয় না,” বলেন এই রপ্তানিকারক।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বড় অংশ জোগায় তৈরি পোশাক

করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে চলতি অর্থবছরে ৪৮ বিলিয়ন (৪ হাজার ৮০০) মার্কিন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে কম ‍ছিল ২৬ শতাংশ।

তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৪ হাজার ৫৩৫ কোটি ৮২ লাখ (৪০.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করে। তাতে প্রবৃদ্ধি হয় ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছিল ৪ শতাংশ।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আনা বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাতে ফেব্রুয়ারি থেকেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল। এরপর শুরু হয় ক্রয়াদেশ বাতিলের হিড়িক। এপ্রিল মাসে এসে রপ্তানির অঙ্কে ধস স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৮%

এই সঙ্কটেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার আয় করেছে, যা ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

মহামারীকালে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ৪৯ শতাংশ। হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ। কৃষি পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩১ শতাংশ। হ্যান্ডিক্রাফট রপ্তানি বেড়েছে ৫৭ দশমিক ২২ শতাংশ।

তবে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি কমেছে ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ