সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে উল্লেখযোগ্য মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তামাক খাতের বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি) লিমিটেডে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের হিসাব বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এ হিসাব বছরে কোম্পানিটি চূড়ান্ত ও অন্তর্বর্তীকালীন মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। লভ্যাংশ ঘোষণার পরদিন স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিএটিবিসির শেয়ার ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ দর হারিয়ে সর্বশেষ ৬২৭ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতনের কারণে গতকাল ৯ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচক। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির আট লাখেরও বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৫১৮ টাকা ও ১ হাজার ৭৯৯ টাকা ৭০ পয়সা।
কোম্পানিটির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ২৭ টাকা ৭২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২০ টাকা ১৬ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ৭ টাকা ৫৬ পয়সা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ। ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৮ টাকা ১৩ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৬২ টাকা ৯৬ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। এর আগে এ হিসাব বছরের জন্য ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি, যা এরই মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০২১ হিসাব বছরের জন্য ২৭৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। সমাপ্ত হিসাব বছরের ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য আগামী ৩০ মার্চ ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ধরা হয়েছে ৩ মার্চ।
এর আগে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫০০ শতাংশ চূড়ান্ত লভ্যাংশ দিয়েছিল বিএটিবিসি। এর মধ্যে ৩০০ শতাংশ নগদ ও ২০০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। এর আগে আলোচ্য হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩০০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সব মিলিয়ে ওই হিসাব বছরের জন্য ৮০০ শতাংশ লভ্যাংশ পান কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস ছিল ৬০ টাকা ৪৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫১ টাকা ৩৭ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৮৮ টাকা ৮৯ পয়সা, যা আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ১৯৮ টাকা ৮৫ পয়সা।
২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৪০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল বিএটিবিসি। তার আগের হিসাব বছরে মোট ৭০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। এর মধ্যে ৫০০ শতাংশ নগদ ও বাকি ২০০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। বিএটিবিসি ১৯৭৭ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন ৫৪০ কোটি টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৪ কোটি। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, দশমিক ৬৪ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার, ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।