ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারের উত্থানের ফলে ভালো মুনাফা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। ওষুধের মূল ব্যবসার বাইরে কোম্পানিটি এ মুনাফা করেছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির বাইরে ব্যাংক ও বন্ডে বিনিয়োগ করে সুদ বাবদও ভালো আয় করেছে কোম্পানিটি। সব মিলিয়ে মূল্য ব্যবসার বাইরে থেকে গত ছয় মাসে ১৬৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে স্কয়ার, যা মূল ব্যবসা থেকে আয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ। আজ মঙ্গলবার স্কয়ার ফার্মা যে অর্ধবার্ষিক (গত জুলাই-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০২১ সালের শেষ ছয় মাসে কোম্পানিটি মূল্য ব্যবসার বাইরে থেকে ১৬৮ কোটি টাকার যে মুনাফা করেছে, তার মধ্যে শেয়ারবাজার থেকে এসেছে ২৩ কোটি টাকার মুনাফা। আর ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রপ্তানির বিপরীতে কোম্পানিটি বাড়তি মুনাফা করেছে পাঁচ কোটি টাকার বেশি।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এ ছয় মাসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বিপরীতে ২৩ কোটি ২২ লাখ টাকা মুনাফা তুলে নিয়েছে। ২০২০ সালের একই সময়ে শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল মাত্র ১৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২৩ কোটি টাকার বেশি।
কোম্পানিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে এ মুনাফা পেয়েছে স্কয়ার ফার্মা। যেসব কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ করে এ মুনাফা মিলেছে, তার মধ্যে রয়েছে লাফার্জহোলসিম, মালেক স্পিনিং, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, গ্রামীণফোন, সায়হাম কটন, ট্রাস্ট ব্যাংক।
জানা গেছে, গত বছর শেয়ারবাজার কিছুটা ভালো থাকায় এবং ব্যাংকের আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় শেয়ারবাজারে কিছু অর্থ বিনিয়োগ করে স্কয়ার ফার্মা। এ ছাড়া করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যেও কিছুটা মন্দাভাব ছিল। এ কারণে হাতে থাকা টাকার বিপরীতে বেশি মুনাফার জন্য কিছু অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কোম্পানিটি। শেয়ারের দাম বাড়ায় সেই বিনিয়োগ থেকে মুনাফা তুলে নেয় কোম্পানিটি।
এ ছাড়া টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে স্কয়ার ফার্মার। আগের বছর এ বাবদ মুনাফা হয়েছিল ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। স্কয়ার ফার্মা উল্লেখিত সময়ে ওষুধ রপ্তানি করে আয় করেছে ৮৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম এক টাকার বেশি বেড়েছিল। তার সুফল পেয়েছে স্কয়ার।
জানতে চাইলে স্কয়ার ফার্মার নির্বাহী পরিচালক (ফিন্যান্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি) মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু আমরা ওষুধ রপ্তানি করি, তাই রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন (রিটেনশন) কোটায় আমাদের কিছু ডলার থাকে। আবার রপ্তানির চুক্তির সময় ডলারের যে দাম ধরা হয়েছিল, যখন রপ্তানি আয় আমাদের কাছে এসেছে; তখন ডলারের দাম বেড়ে যায়। ফলে আমরা তার সুফল পেয়েছি।’