1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ অপরাহ্ন

সাউথ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২
sbac

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নতুন প্রজন্মের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও আরেক পরিচালক ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেনের
বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) তাদের দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা করেন।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নতুন প্রজন্মের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ছিলেন এসএম আমজাদ হোসেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে তিনি একজন ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপি। কর্মচারীদের অপব্যবহার করে জাল কোম্পানি খোলার মাধ্যমে নিজ ব্যাংকের ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

ব্যাংকটির ঋণ জালিয়াতির আরেক পরিচালক হলেন ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেন। বহুল আলোচিত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (পিএলএফএস) কোম্পানির পতনে তার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। এসবিএসি’র অর্থ আত্মসাতে মোয়াজ্জেমও ছিলেন আমজাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

২০১৩ সালে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন আমজাদ হোসেন। তার মেয়াদেই বোর্ডের একজন পরিচালক হন মোয়াজ্জেম। তবে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন আমজাদ। তিনি চলে যাওয়ার এক মাস পর মোয়াজ্জেমও পরিচালক পদে ইস্তফা দেন।

তবে অসংখ্য জালিয়াতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এই দুই ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের আশীর্বাদই পেয়েছিলেন। কারণ দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ আমানতকারীর স্বার্থ বিবেচনায় আলোচিত এই দুই জনের বোর্ড সদস্যপদ লাভে বাধা দেয়নি।

অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক একাধিক তদন্তে ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের ঘটনায় তাদের উভয়ের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছিল। এসবিএসি’র চেয়ারম্যান থাকার সময়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব প্রতিবেদনে আমজাদ হোসেনকে ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া গত বছর জনতা ব্যাংকের ৫৮ কোটি টাকা খেলাপি করেও তিনি স্বপদে বহাল ছিলেন। তবুও কর্তৃপক্ষ তাকে পদ থেকে অপসারণ করেনি বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখনও ব্যাংকের পরিচালক বোর্ডে রয়েছেন আমজাদ ও তার স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ।

এদিকে, পিপলস লিজিংয়ের পতনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব তদন্তে একইভাবে অন্যতম দোষী বলে চিহ্নিত হন মোয়াজ্জেম। ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোয়াজ্জেম পিপলসের চেয়ারম্যান ছিলেন, এসময়ে পরিচালকদের ৬৭০ কোটি টাকার সুবিশাল দুর্নীতি প্রতিষ্ঠানটির পতন ডেকে আনে।

নেপথ্য এই ইতিহাস থাকার পরও তাকে নতুন আরেকটি ব্যাংকের (সাউথ বাংলা) পরিচালক হওয়ার অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক, যেখানে তিনি আবারো জালিয়াতির পুনরাবৃত্তি করেন।

এভাবে কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের অপব্যবহারে জালিয়াত শিরোমণিদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আমানতকারীদের অর্থ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, আশ্চর্যজনকভাবে জালিয়াত শিরোমণিরা খুব সহজে অন্যান্য কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় থেকেও ফাঁকি দিতে পারছে। যেমন দুদকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও গেল বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে পালাতে সক্ষম হয়েছেন আমজাদ।

এই ইস্যুতে দুদক, পুলিশ বিভাগ, অভিবাসন পুলিশ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে আমজাদ হোসেন দেশ ছেড়ে পালাতে পারলেন তার ব্যাখ্যাও চেয়েছেন।

দুদক তদন্তের ফলাফল:

মামলার এজাহারে দুদক বলেছে, পিপলস লিজিং লুটপাটে একাধিকবার উঠে এসেছে মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম। এখন তার সাথে আমজাদ হোসেনের নামও যোগ হয়েছে।

দুই পরিচালকই দুটি ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে ঋণ নিয়ে ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেন। কোম্পানি দুটির নাম- রাফি-মাহি কর্পোরেশন ও আল-আমিন কর্পোরেশন। কাগজেকলমে রাফি-মাহি কর্পোরেশনের মালিক এ কে এম আসিফ উদ্দিন। কিন্তু বাস্তবে আসিফ হলেন লকপুর গ্রুপের কর্মচারী, যার চেয়ারম্যান হলেন আমজাদ।

আসিফ ব্যবসা সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তবে তার নিয়োগকর্তার নির্দেশে এই নামে কোম্পানি খুলেছেন বলে দুদকের কাছে স্বীকার করেন।

তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুসারে, আমজাদ তাকে ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য টাকা দেন। যদিও বাস্তবে এই নামে কোম্পানি তৈরি হয়নি, ছিল শুধু কাগুজে। আমজাদ একটি চেক বইয়ে আসিফের স্বাক্ষরও নেন। দুদকের পরিদর্শক দলও প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা খুঁজে পায়নি।

কোম্পানিটি খোলার পর এটি এসবিএসি ব্যাংকে ১২ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করে এবং মতিঝিল শাখা ২০১৭ সালে কোনোপ্রকার জামানত না নিয়েই সেই ঋণ মঞ্জুর করে। দুদকের মামলার বিবৃতি অনুযায়ী, ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ উত্তোলনে আমজাদকে সহায়তা করেন মতিঝিল ব্রাঞ্চের ম্যানেজার।

ঋণের রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, পরে ওই ঋণের সমুদয় অর্থ মোয়াজ্জেম ও আমজাদের মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানিতে ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে স্থানান্তর করা হয়, যা অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২- এর সরাসরি লঙ্ঘন।

দুদক বলেছে, ঋণটি যে কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করা হয়- সে কাজে ব্যবহৃত হয়নি এবং ব্যাংকও ঋণের ব্যবহার মনিটর করেনি।

অপর কাগুজে কোম্পানি আল-আমিন কর্পোরেশনের মালিক হলেন মাসুদুর রহমান। সদর দপ্তরকে না জানিয়েই কোম্পানিটির একটি কার্যাদেশের পক্ষে ৮ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেয় ব্যাংকের বিজয়নগর শাখা।

দুদকের তদন্ত দল সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ঋণ অনুমোদন সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র পায়নি। লকপুর গ্রুপের বিভিন্ন কর্মচারীরা ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা তুলে নেয়। ওই ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আমজাদকে একাউন্ট থেকে অননুমোদিত ওই ঋণের অর্থ উত্তোলনে সহায়তা করেন, আর সেটাও ছিল অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর লঙ্ঘন।

দুই পরিচালকই গত বছরের ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় ওই দুটি ঋণের কথা স্বীকার করেন এবং ছয় মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বোর্ডের গৃহীত সিদ্ধান্ত (রেজুলেশন) প্রমাণ করে আমজাদ ও মোয়াজ্জেম ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ